দুবলার চরে শুরু হচ্ছে বৃহত্তম শুঁটকির মৌসুম

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দরবন অভ্যান্তরের দুবলার চরে শুরু হয়েছে দেশের বৃহত্তম শুঁটকির মৌসুম।
বিজ্ঞাপন
প্রজনন মৌসুমে সরকারের ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে না হতেই অপেক্ষামান জেলেরা শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকেই শুটকি পল্লী হিসাবে আলোচিত সুন্দরবনের দুবলার চরে যাওয়া শুরু করেছে। আগামী ৫ মাস সেখানে অবস্থান করবেন হাজার হাজার জেলে ও শুটকি মাছ ব্যবসায়ীরা।
জীবনের ঝুঁকি আর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েই উপকূলের জেলেরা সমুদ্র পাড়ের এই শুঁটকি পল্লীতে কর্মচাঞ্চল্যতায় থাকবে বলে জানায় সুন্দরবন বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
শুটকি মৌসুমকে সামনে রেখে কেউ নতুন ট্রলার তৈরি করেছেন, কেউ পুরোনো নৌকা মেরামত শেষ করেছেন। মহাজনের চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কিংবা স্বর্নালংকার বন্ধক রেখে জেলেরা সাগরযাত্রা শুরু করেছেন।
খুলনা ডুমুরিয়ার জেলে রবিন বিশ্বাস বলেন, প্রতি বছরই ঋণ করে সাগরে যেতে হয়। এবারও পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। জলদস্যুদের উৎপাত ফের বেড়েছে শুনে ভয় লাগছে।
জেলে দ্বীপক মল্লিক বলেন, অনেকে এবার সুদের টাকা দিতে না পেরে স্বর্ণ বন্ধক রেখেছেন। দস্যু, ঝড় ও জলোচ্ছাস সব ভয় নিয়েই দুবলায় যাত্রা করছেন।
বিজ্ঞাপন
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, এ বছর দুবলায় শুটকি মৌসুম শুরু হচ্ছে ২৬ অক্টোবর থেকে, চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
জেলেরা সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর পাড়ের আলোরকোল, অফিস কেল্লা, নারকেলবাড়িয়া ও শ্যালারচরে অবস্থান করবেন জেলেরা। এসব চরে জেলেদের জন্য এবার ৯০০টি অস্থায়ী ঘর ও ৮০টি দোকান তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মুদি, ওষুধ, তেল, সেলুন ও হোটেলের দোকান রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া মাছ বেচাকেনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১০০টি ডিপোর। এখান থেকে দেশব্যাপী পাইকারি বাজারে সরবরাহ করা হয় শুঁটকি মাছ।
তিনি বলেন, গত মৌসুমে শুটকি পল্লী থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল সাড়ে ৬ কোটি টাকা। এবার ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
দুবলার চরে দেশের মোট শুঁটকি উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ তৈরি হয়। বর্ষা মৌসুমে ইলিশ ধরা শেষ হলে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে জেলেরা এখানে অস্থায়ী বসতি গড়ে তোলেন।
বিজ্ঞাপন
ঘর ব্যবস্থাপনা নির্মাণে জেলেরা বনের কোনো গাছপালা কাটতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।








