মির্জাপুরে অসমাপ্ত সেতুর কাজ-সীমাহীন দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কলিমাজানী গ্রামে লৌহজং নদীর ওপর নির্মিতব্য সেতুর কাজ পাঁচ-ছয় বছর আগে শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ, ফলে ৯টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চরম দুর্ভোগে ভুগছেন।
বিজ্ঞাপন
সেতুটি সম্পূর্ণ না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে খেয়া নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়েই পারাপার হতে হয় স্থানীয়দের। উপজেলার পথহারা, কলিমাজানী, বংকুরতলা, বেত্রাশিন, চান্দুলিয়া, দস্তিরপাড়া, ভানুয়াবহ, রানাশাল, কালিয়াকৈর ও আড়াইগঞ্জ গ্রামের প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই খেয়াঘাট ব্যবহার করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শিল্পাঞ্চল গোড়াইয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় এই এলাকার অনেক নারী-পুরুষ প্রতিদিন বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতে যান। কিন্তু খেয়া পারাপারে বিলম্ব হওয়ায় সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেন না তারা। এতে কর্মজীবী মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও ব্যবসায়ীরাও অত্যন্ত ভোগান্তিতে পড়ছেন।
গ্রামবাসীর ভাষায়, “সেতুটি সম্পূর্ণ হলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যেত। কিন্তু কাজ থেমে যাওয়ায় প্রতিদিনই সময়, অর্থ ও ঝুঁকি— তিনটিতেই ক্ষতির শিকার হচ্ছি আমরা।”
বিজ্ঞাপন
এলাকার শিক্ষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, কলিমাজানী ও আশপাশের এলাকার দুটি কলেজ, তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া দেওহাটার সাপ্তাহিক পশুর হাটে যাওয়া পশু ব্যবসায়ীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, জরুরি চিকিৎসা নিতে কুমুদিনী হাসপাতালে যেতে হয় এমন অনেক রোগী, এমনকি গর্ভবতী নারীরাও এই সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় জীবনঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। রাতে খেয়া না থাকলে অনেক সময় জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নিতে না পেরে বিপাকে পড়তে হয় পরিবারগুলো।
মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চালকরা জানান, বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে, কেউ কেউ আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ রিজন বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির টেন্ডার বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিজ করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে সেতুর কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।
স্থানীয়রা দ্রুত সময়ের মধ্যে কলিমাজানী সেতুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করা এবং গোড়াই সোহাগপুর হাইওয়ে থেকে সেতুর দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক প্রসস্ত ও সমাপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি।








