যানশূন্য বিমানবন্দর সড়ক, হেঁটে গন্তব্যে ছুটছেন যাত্রীরা

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীতে বিরাজ করছে ব্যতিক্রমী পরিবেশ।
বিজ্ঞাপন
তাকে ঘিরে আয়োজিত গণসংবর্ধনাকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে তুলতে রাজধানীর পূর্বাচল সংলগ্ন ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ নেতাকর্মীর ঢল নেমেছে ঢাকায়।
এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায়। বিশেষ করে বিমানবন্দর সড়কজুড়ে তীব্র যানবাহন সংকট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁও থেকে শুরু করে মহাখালী, বনানী, কুর্মিটোলা, কুড়িল ও খিলক্ষেত হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, সড়কের প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান। ফলে সাধারণ যাত্রীদের বড় অংশই বাধ্য হয়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সিলেট থেকে ঢাকার পথে তারেক রহমান
বিজ্ঞাপন
সড়কে গণপরিবহন প্রায় না থাকায় অনেকেই বিকল্প হিসেবে মোটরসাইকেল বা সিএনজি খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে এসব যানবাহনের সংখ্যাও খুব সীমিত। ফলে লাগেজ হাতে কিংবা মাথায় মালামাল নিয়ে পথ চলতে দেখা গেছে অসংখ্য যাত্রীকে। এমনকি ছোট শিশু কোলে নিয়েও হেঁটে যেতে দেখা গেছে কিছু পরিবারকে। প্রবাসফেরত যাত্রীদের মধ্যেও ভোগান্তির চিত্র স্পষ্ট।
ময়মনসিংহ থেকে ট্রেনে ঢাকায় আসা যাত্রী জান্নাতুর রহমান বলেন, ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্য দিয়ে ঢাকায় এলাম। কিন্তু বিমানবন্দর এলাকায় নেমে বুঝলাম, সামনে আরও বড় ভোগান্তি অপেক্ষা করছে। মহাখালী যাওয়ার কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় বাসই নেই। ভাবিনি পরিস্থিতি এতটা জটিল হবে।
নরসিংদীগামী যাত্রী ফিরোজ মাথায় মালামাল নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলেন, বিমানবন্দরের সামনে এসে দেখি সব বাস রিজার্ভ। দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো উপায় পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে হেঁটেই সামনে এগোচ্ছি। ভোগান্তি তো হচ্ছেই, না হলে মাথায় মাল নিয়ে হাঁটতে হতো না।
বিজ্ঞাপন
এদিকে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ বেলা ১২টার দিকে তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। সেখান থেকে তিনি সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে যাবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
তার প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। গত রোববার দুপুর থেকে টানা দিন-রাত পরিশ্রম করে শ্রমিকরা মঞ্চ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন। পুরো প্রস্তুতি কার্যক্রম তদারক করছেন সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা। সমাবেশ ঘিরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা; গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও সংবর্ধনা কমিটির সদস্যসচিব রুহুল কবির রিজভী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই গণসংবর্ধনায় প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে। তার ভাষায়, আজ এই এলাকা মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে।








