সব অন্যায় করার অধিকার তাদের রয়েছে: মাহমুদুর রহমান

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও সাজানো নাটকের চিত্র তুলে ধরেছেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন, তৎকালীন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক আগে থেকেই প্রসিকিউটর জেয়াদ আল-মালুমকে শিখিয়ে দিতেন কীভাবে আদালতে আচরণ করতে হবে। এমনকি তাকে নির্দেশ দিতেন- ‘আপনি দাঁড়াইয়া যাবেন, আমি বসাইয়া দিমু। সবাই ভাববে আমাদের খাতির নেই।’
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার মামলায় ৪৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিতে গিয়ে এসব তথ্য জানান মাহমুদুর রহমান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল তার সাক্ষ্য রেকর্ড করে।
বিজ্ঞাপন
মাহমুদুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শাপলা চত্বরে ঘটনার কিছুদিন আগে জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিম লন্ডনে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে নিয়মিত স্কাইপে কথা বলতেন। সে সময় সাক্ষীর জেরা থেকে শুরু করে খসড়া রায় পর্যন্ত বিদেশে বসেই প্রভাবিত করা হতো। এর প্রমাণস্বরূপ স্কাইপ কথোপকথন ও ইমেইল ফাঁস হয়, যা পরে আমার দেশ ও দ্য ইকোনমিস্ট-এ প্রকাশিত হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রকাশিত নথিপত্র প্রমাণ করেছে যে রায়গুলো ছিল পূর্ব নির্ধারিত। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিচারকে নাটকীয়ভাবে সাজানো হয়েছিল। তবে এসব ফাঁস হওয়ার পর বিচারপতি নিজামুল পদত্যাগে বাধ্য হলেও শাস্তি পাননি। বরং পুরস্কারস্বরূপ তাকে হাইকোর্ট, পরে আপিল বিভাগে উন্নীত করা হয় এবং অবসরের পর প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান অভিযোগ করেন, “ফ্যাসিস্ট সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে, সব অন্যায় করার অধিকার তাদের রয়েছে।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এদিন সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে শুরু হওয়া তার সাক্ষ্য দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলে। এক ঘণ্টা বিরতির পর আবারও সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
এদিকে, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আরও দু-একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলেই এ মামলার কার্যক্রম শেষ হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন