Logo

আপনি বেশি কথা বলেন, আদালত বিব্রত হয়: আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনাল

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬:০০
48Shares
আপনি বেশি কথা বলেন, আদালত বিব্রত হয়: আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনাল
আইনজীবী মো. আমির হোসেন | ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক পর্যায়ে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আপনি বেশি কথা বলেন। এমন এমন কথা বলেন, যা আদালতের জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। মামলাটি গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত, যেখানে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চে ওইদিন ছিল মামলার তৃতীয় দিনের শুনানি। বেঞ্চের অন্য সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সেদিন তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন শহীদ নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা। জেরা শুরু হলে রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনার স্বামীকে কে গুলি করেছিল, আপনি কি দেখেছেন?”

এ প্রশ্নে আপত্তি জানায় প্রসিকিউশন, জানিয়ে দেয় যে একই প্রশ্ন আগেও করা হয়েছে। তখন আদালত আমির হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এতে আপনার লাভ কী হবে? তার স্বামী মারা গেছেন, সেটাই তো প্রমাণ। আপনার আসামিদের নামও এখানে বলা হয়নি।”

জবাবে আমির হোসেন বলেন, “মাই লর্ড, লাভের হিসাব অনেক দীর্ঘ। এ প্রশ্নে আমার আসামিদের লাভ হতে পারে।” পরে আদালত মন্তব্য করে, “আপনি বেশি কথা বলেন, এমন কথা বলেন যা আদালতকে বিব্রত করে তোলে। সাক্ষী একজন ভুক্তভোগী, তার সাক্ষ্যে আপনার আসামিরা তো মুক্তি পাচ্ছেন না।”

বিজ্ঞাপন

এরপর আইনজীবী সংক্ষিপ্ত জেরা শেষে সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ সম্পন্ন করেন।

বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে নাদিম মিজানের স্ত্রী নিহা সাক্ষ্য দিতে আসেন তিন বছরের ছেলে আনাস বিন নাদিমকে নিয়ে। শপথ শেষে তিনি রামপুরায় তার স্বামীকে হত্যার পুরো ঘটনা তুলে ধরেন এবং বিচার দাবি করেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন গাজী এমএইচ তামিম, সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও সাইমুম রেজা তালুকদার।

বিজ্ঞাপন

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় বর্তমানে গ্রেপ্তার রয়েছেন রামপুরা ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার। পলাতক চার আসামি হলেন- ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মশিউর রহমান ও এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।

গত ১০ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রামপুরায় পুলিশের গুলিতে নাদিম মিজান ও মায়া ইসলাম নিহত হন। মায়ার ছয় বছর বয়সী নাতি বাসিত খান মুসা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং এখনও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন।

এছাড়া, একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন আমির হোসেন নামের এক তরুণ, যিনি পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে উঠে প্রাণ বাঁচাতে রড ধরে ঝুলে ছিলেন। পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, এতে তিনি নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে তিনি বর্তমানে বেঁচে ফিরলেও এখনও শারীরিকভাবে অসুস্থ।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD