হাসিনাসহ ২১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ, সময় দুই মাস

রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত গণহত্যা, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২১ জন আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত তদন্ত সংস্থাকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দিয়ে মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২০২৬ সালের ১২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম.এইচ. তামিম। তিনি মামলার অগ্রগতি তুলে ধরে তদন্ত সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন জানান। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে নির্ধারিত সময়সীমা বাড়িয়ে দেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ১২ আগস্ট দিন নির্ধারিত ছিল। তবে তদন্ত অসম্পূর্ণ থাকায় ট্রাইব্যুনাল ফের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চালানো হয়, যেখানে ব্যাপক হতাহতের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করে হেফাজতের নেতা আজিজুল হক ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলাটি সংগঠনের নেতা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষ থেকে করা হয়।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকারসহ গণমাধ্যমের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: গ্রেফতার হতে পারেন হিরো আলম
বর্তমানে চারজন আসামি গ্রেফতার অবস্থায় রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক একে এম শহিদুল হক এবং সাবেক ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম। বুধবার তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৫ মে রাতে শাপলা চত্বরে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানে নামে, যেখানে শতাধিক মানুষ নিহত ও বহু আহত হন। অভিযোগপত্রে ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আদালতের এই নির্দেশের ফলে দীর্ঘ ১২ বছর পর আলোচিত শাপলা চত্বরের ঘটনাটি নতুন করে তদন্তের গতি পাচ্ছে, যা দেশের রাজনীতিতে আবারও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।







