সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:১০ পূর্বাহ্ন, ১১ই ডিসেম্বর ২০২২
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় মাঠে মাঠে সবুজের মাঝে ফুটে আছে হলুদ সরিষা ফুল। শীতের হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে সুবাস। মধু আহরণে ফুলে ফুলে বসছে মৌমাছি। সেই সাথে সরিষার হলুদ ফুলে মনোমুগ্ধকর হয়ে ছবি তুলছেন কোমলমতি শিশু সহ সকল বয়সী নারী পুরুষ। যত দূর চোখ যায় হলুদের সমারোহ। এই মৌসুমে বদলগাছী উপজেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষা চাষাবাদ করা হচ্ছে।চলতি মৌসুমে উপজেলাতে সরিষা চাষের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১০৪৫ হেক্টর এবং অর্জিত হয়েছে ১২শ' ৫০হেক্টর যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ২০৫হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদণ বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে সরিষার বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়। শুরুর দিকে সরিষা খেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছিল কিন্তু কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যা এবং মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়। এখন কৃষকেরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন। সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে উপজেলার মথুরাপুর,আধাইপুর মিঠাপুর,পাহাড়পুর,ও কোলা ইউনিয়নে।
উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামের কৃষক শ্রীঃ তাপস চন্দ্র মন্ডল জনবাণীকে বলেন, ‘আমি এ বছর দুই বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে অল্প বীজ পেয়েছি। পরে আমি নিজে বাজার থেকে সরিষার বীজ কিনে জমিতে সরিষা বীজ বপন করি। প্রতিটি সরিষাগাছে প্রচুর পরিমাণ ফুল ধরেছে। ফুলগুলো আকারেও বড় হয়েছে। মনে হচ্ছে, এবার সরিষার ফলন ভালো পাব। সময়মতো সরিষা তুলে বিক্রি করতে পারলে বাড়তি কিছু টাকা আসবে। এতে পুরোদমে ইরি-বোরো চাষ করতে পারব।
উপজেলার মথরাপুর ইউপির জগৎনগর গ্রামের মকবুল বলেন, চলতি মৌসমে আমি ৩বিঘা ধানী জমিতে সরিষা লাগিয়েছি। এই বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলনের আশা করছি। বাজারেও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নিজ পরিবারের তেলের যোগান দিতেই আমি সরিষার চাষ করি। বাড়তি সরিষা বাজারে বিক্রি করি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান বলেন, চলতি মৌসুমে বদলগাছী উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। লক্ষমাত্রার ছাড়িয়ে ২০৫হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ মন সরিষা ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি কৃষকেরা অন্যান্য আবাদে ও ঝুঁকেছেন। যথাসময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকেরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ধরনের ক্ষতি না হলে এ উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরএক্স/