খুলনায় দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মেলেনি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, ৫ই জানুয়ারী ২০২৩


খুলনায় দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মেলেনি
খুলনা শিশু হাসপাতাল

কুয়াশা ঢাকা ভোর জানান দিচ্ছে, পৌষ এসে গেছে। খুলনায় দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মেলেনি। তবে সূর্য আড়ালে ঢাকা পড়লেও থেমে নেই কর্মজীবী মানুষ। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করেই জীবন ও জীবিকার তাগিদে মাঠে কাজ করতে হচ্ছে দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের। রাতের আড়মোড়া ভেঙে সবাই যখন চোখ মেলেছে, ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। দিন দিন জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা হাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বেশি বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে শহর বন্দর গ্রাম।


বুধবার (০৪ জানুয়ারি) খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে হিমেল কনকনে হাওয়া কাঁপন তুলছে। রয়েছে কুয়াশার দাপটও। ঘর থেকে বেরোলেই শরীরে কাঁপন ধরায়। শীত ও ঘন কুয়াশায় কাবু জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতের আক্রমণে নাগরিকরা রীতিমতো জবুথবু। গায়ে গরম কাপড় ও টুপি পরে তারা শীতের দাপট থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে।


স্থানীয়রা জানান, খুব ঠাণ্ডায় কষ্ট পাচ্ছি। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে, পুরো শরীর অচল হয়ে আসছে। এদিকে ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে সেই সাত সকালেই বের হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তবে ঘন কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই মহাসড়কের দূরপাল্লার যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে রিকশা, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইকের চলাচল কম।


সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অসহায় ছিন্নমূল মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তীব্র শীতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে ভোরে কাজের সন্ধানে যাদের বের হতে হচ্ছে, তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।


অতিরিক্ত শীতের কারণে হাসপাতালে দিন দিন বেড়ে চলেছে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ শীতের এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে ছুটছেন। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে কিছু রোগব্যাধিরও আগমন ঘটে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। শীত এলে মানুষের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, টনসিলের ব্যথা, বাতের ব্যথা, ব্রংকাইটিস, সিওপিডি, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, নিউমেনিয়া, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন রোগ বাড়ে। মৌসুমি এসব রোগব্যাধি থেকে রক্ষায় সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।


আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ বুধবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। তবে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, চলতি জানুয়ারিতে দেশে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সারা দেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।


খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, একদিকে সূর্যের তাপমাত্রা নেই, অন্যদিকে উত্তর দিক থেকে বাতাস অব্যাহত থাকায় জেঁকে বসেছে শীত। আরো দুই-তিনদিন শীতের তীব্রতা এভাবে অব্যাহত থাকবে।