রাজারহাটে অতি কষ্টে কামারদের চলছে জীবন সংগ্রাম


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৩


রাজারহাটে অতি কষ্টে কামারদের চলছে জীবন সংগ্রাম
কামারদের কর্ম চলছে

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়ির হাট এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙ্গে কমারদের টুং টাং শব্দে। ভোর থেকে শুরু হয় কামারদের কর্মযজ্ঞ। গরম লোহায় হাতুড়ি পিটিয়ে  বানানো হয় দৈনন্দিন জীবনে মানুষের ব্যবহারের জিনিসপত্র। 


এখানকার কামারেরা বিভিন্ন রকম গৃহ এবং কৃষি সামগ্রী প্রস্তুত করে থাকে।তাদের প্রস্ততকৃত সামগ্রীর মধ্যে দা,কাস্তে,কুড়াল,কোদাল,শাবল,বটি,ছুরি,নিড়ানি, বেদে কাটি,খুন্তি, লাঙলের ফলা,ইত্যাদি। প্রায় কয়েক যুগ ধরে বাপ দাদার পেশাকে ধরে রেখেছে তারা উপজেলার


তিস্তা পাড়ের বুড়ির হাট এলাকায় গেলে চোখে পড়বে  লোহার কারিগরদের লোহা দিয়ে বানানো নানা দ্রব্যসামগ্রী বানানোর দৃশ্য, লোহা পেটানোর কর্কশ শব্দ, পোড়া গন্ধ, পোড়া লোহা থেকে বিচ্ছুরিত আগুনের স্ফুলিঙ্গই এখানকার সাধারণ দৃশ্যচ্ছবি। ছোট একটি বাজারে পাঁচটি কামারের দোকান। 


একসময় গৃহ এবং কৃষি সামগ্রীর পাওয়ার একমাত্র  উপায় ছিল এসব কারিগরের বানানো জিনিস পত্র;কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে গৃহ এবং কৃষি সামগ্রীতে এসেছে প্রযুক্তির ছোঁওয়া। তাই তাদের  কদর এখন আগের মত নেই। 


এখানকার কর্মরত এক কামার শ্রী নির্মল চন্দ্র মোহন্ত বলেন,  আমি আমার বাবাকে এই কাজ করতে দেখেছি,আমার দাদাও এই কাজ করতো,আমিও প্রায় চল্লিশ বছর ধরে এই কাজের সাথে জড়িত। অন্য কোন কাজ শিখিনী।একসময়ঃ তিস্তা, কাউনিয়া, চিলমারীর, উলিপুর,গাইবান্ধা, মহিন্দ্রনগর,লালমনিরহাট  থেকে আসতো পাইকারেরা, তাদের এসব বাহারি জিনিস পত্র কিনতে। কিন্তু এখন আর ওভাবে পাইকেররা আসে না। তাই ছেলে সন্তান ও পরিবার নিয়ে অনেকটা কষ্ট করে চলছে তাদের  সংসার। 


আপনার সন্তানকে এই পেশায় নিয়ে আসবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মল চন্দ্র মোহন্ত বলেন। বাপ-দাদার পেশাকে তো আর বাদ দিতে পারি না। তাছাড়া আমাদের তেমন কোন জমিজমা নেই। তাই এই  পেশায় একমাত্র অবলম্বন। 


এলাকাবাসী বলেন, বাপদাদার পেশাকে ধরে রাখতে এসব পেশাজীবি কামারেরা এখনও তাদের পেশাকে ধরে রেখেছেন। তাই তাদের এই পেশাকে ধরে রাখতে  প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ট-পোষকতা।


জেবি/এসবি