‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে আরো রঙিন করবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
মো. রুবেল হোসেন
প্রকাশ: ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বাংলাদেশ- ভারতের সম্পর্ক মহান মুক্তিযুদ্ধে সময়ে রক্ত দিয়ে তৈরি। ৫০ বছর ধরে এ সম্পর্ক বিদ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে এ সম্পর্ক অন্যরকম উচ্চতায় চলে গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন। করোনা মহামরীর সময়েও তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাল সম্পর্ক রয়েছে। গঙ্গা বিলাসের এ সফরের মধ্য দিয়ে তা পশ্চিমা দেশে পৌঁছে গেছে। তাদের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে চলে গেছে। সর্বক্ষেত্রে অন্যরকম উচ্চতায় চলে গেছে। গঙ্গা বিলাস জাহাজটি যখন বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে তখন বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে দিয়ে আরো রঙিন করে দিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) মোংলা বন্দরে ভারতীয় ক্রুজ ভেসেল ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ এর আগমন উপলক্ষ্যে পর্যটকদের অভ্যর্থনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, সুইজারল্যান্ডের পর্যটক হ্যান্স কাফম্যান বক্তব্য রাখেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল,বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভারতের পর্যটকবাহী নৌযান ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’ গতকাল বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করে। ‘গঙ্গা বিলাস’ এর পর্যটকদের বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আংটিহারায় অনবোর্ড ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করবে।
‘এমভি গঙ্গা বিলাস‘ বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর অনুযায়ি প্রটোকল রুটের নাব্যতা রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌপথ ব্যবহারের জন্য ভয়েজ পারমিশন প্রদান এবং ভয়েজ পারমিশনের সার্বিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিআইডব্লিউটিএ।
আংটিহারায় অনবোর্ড কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং এনবিআর। চিলমারীতে কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং এনবিআর। বাংলাদেশের নৌপথ অতিক্রমকালে জাহাজটিকে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করার পদক্ষেপ নিবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এন্ট্রি পয়েন্ট আংটিহারাতে সকল যাত্রি এবং নাবিকদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।
নৌযানটির ভয়েজ পরিচালনাকালে সার্বক্ষণিক মনিটর করবে জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি ‘মেসার্স গালফ ওরিয়েন্ট সীওয়েজ’; দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন করবে ট্যুর অপারেটর কোম্পানি ‘জার্নিপ্লাস’।
আরো উল্লেখ্য, বিলাসবহুল ‘গঙ্গা বিলাস’ ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে ১৩ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি ‘গঙ্গা বিলাস’ এর যাত্রা উদ্বোধন করেন।
১৯৭২ সালের প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড এর অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল; যা এখনো কার্যকর আছে। প্রটোকলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রি ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাশে-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রি ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উক্ত সমঝোতা স্মারকের আলোকে ২০১৮ সালে এসওপি স্বাক্ষরিত হয়। এসওপি’র আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রি ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর হতে তিনটি ভারতীয় এবং একটি বাংলাদেশী নৌযান চলাচল করেছে।
আরএক্স/