স্বামীর খোঁজে ঢাকায় এসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ, গ্রেফতার ৫


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


স্বামীর খোঁজে ঢাকায় এসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ, গ্রেফতার ৫
গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৫

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে স্বামীর খোঁজে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। 


এদিকে এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসামিরা হলেন- বিল্লাল হোসেন (২৫), আল আমিন হোসেন (২৬), মো. সবুজ (২৬), মো. রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২৬)।


রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক।


তিনি বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি জেলা থেকে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মোহাম্মদপুরেরর বসিলায় আসেন। বসিলা এলাকার এক বাসায় ভুক্তভোগী তার স্বামী-সন্তানসহ থাকতেন। আনুমানিক ৪ মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার জন্য সন্তানদের স্বামীর কাছে রেখে ভিকটিম তার গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। এরমধ্যে স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন।


ঘটনার দিন বিকেলে ভুক্তভোগী ওই নারী তার আগের বাসায় এসে স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। বাড়ির মালিক ও পাশের ভাড়াটিয়ারা তার স্বামী-সন্তানদের কোনো ঠিকানা দিতে পারেননি। পরে সেদিন রাত ৯টা পর্যন্ত বছিলা চল্লিশটি হাউজিং, ফিউচার হাউজিং, গার্ডেন সিটি হাউজিং, স্বপ্নধরা হাউজিংয়ের আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে। পরে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।


সংবাদ সম্মেলনে ডিসি বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে অজ্ঞাতনামা রিকশাচালক পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগী নারীকে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে বসিলা ফিউচার টাউন রোডের শেষ মাথায় একটি অস্থায়ী শ্রমিকদের টিনের ঘরে ভিকটিমকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে ওই নারীকে জোরপূর্বক পালাক্রমে পাঁচজন ধর্ষণ করে ও দুইজন পাহারা দেয়। পরে ওই নারীর আত্মচিৎকারে এলাকার কর্তব্যরত নিরাপত্তার রক্ষী ও লোকজনদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আসামিরা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে মোহাম্মাদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ভুক্তভোগী ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয় এবং প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।


এইচএম আজিমুল হক বলেন, মামলা হওয়ার পর থেকে আশপাশের সিসি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সাত ব্যক্তি ও তিনটি রিক্সার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকা থেকে ভুক্তভোগী মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় এবং শাহিন খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামি বিল্লাল হোসেনকে গাবতলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকার ডেমরা হতে আরেক আসামি আল আমিন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।


বসিলা থেকে মো. সবুজ ও রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভোলার তজুমদ্দিন থানা থেকে শফিকুল ইসলাম নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের হেফাজতে থাকা দুইটি রিক্সা উদ্ধার করা হয়। দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।


এ সময় তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, সহকারী পুলিশ কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান ও মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।