পর্যটন নগরীর রাস্তা যেনও ময়লার ভাগাড়


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


পর্যটন নগরীর রাস্তা যেনও ময়লার ভাগাড়
পর্যটন নগরীর রাস্তা যেনও ময়লার ভাগাড়

এক যুগ পার হলেও ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করতে পারেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে লেম্বুরবনে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার আধা-কিলোমিটারের দুপাশ জুড়ে পৌরসভার ফালানো বর্জ্য-পলিথিনে সয়লাব পুরো এলাকা।


কুয়াকাটা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শরীফপুরে সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন একটি খোলা জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ পৌরসভার সকল বর্জ্য ফেলার কারণে পুরো এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাথে সাথে বাসা বাড়িতে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।


দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছিল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এসব ময়লা বাতাসে উড়ে বাসা বাড়িতে এবং জমিতে যার কারণে কোন ধরনের  কৃষিকাজ করতে পারেন না ওখানকার কৃষকরা, কারণ যেখানে পলিথিন প্লাস্টিক থাকে সেখানে কোন ফসল হয়না। 


তথ্যমতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। কুয়াকাটা পৌরসভা প্রথমে তৃতীয় শ্রেণির থাকলেও পরবর্তীতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নতি হওয়ার পরেও বেহাল দশা কাটেনি।


সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড সড়কের খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সড়কের ওপরে ফেলা ময়লা ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। সেই ভাগাড়ে জ্বলছে আগুন। ময়লা- আবর্জনায় ঢেকে গেছে সড়কের অর্ধেক। বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো এলাকা। বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। সবাই নাক চেপে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান বাসিন্দারা।


ওই এলাকার বাসিন্দা নুরু ব্যাপারী বলেন, পৌর শহরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে ময়লার ভাগাড়টি সব উন্নয়নকে ফিকে করে দিয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা যায় না। কবে মুক্তি মিলবে, তাও জানি না। 


স্থানীয় অটোরিকশা চালক শাহীন বলেন, ‘দুর্গন্ধের কারণে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। তাই আমরা পর্যটক নিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে গাড়ি নিয়ে যেতে কষ্টকর।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হচ্ছে  ‘ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে হয়তো বাসাবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে।’


ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে আগত পর্যটক আজমল বলেন, আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনের এমন অব্যবস্থাপনা আমাকে আহত করেছে। এখানে দেশ বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে। কিন্তু ময়লার উপস্থিতি সর্বত্র। এগুলো সরিয়ে নির্দিষ্ঠ জায়গায় রেখে পরিবেশ সুন্দর করা দরকার।


রাস্তার পাশে স্তূপ রাখা ময়লা পোড়ানোর দায়িত্বে থাকা ফারুক হোসেন বলেন, ‘ময়লার গাড়ি এলে আমি  ময়লা ফেলার পর পেট্রোল দিয়ে পোড়াই। সব আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁর ময়লা ফেলা হয়। পলিথিন ও পশুপাখি মারা গেলে তাও এখানে নিয়ে আসা হয়।’


তবে এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন পৌরসভার মেয়র। এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন কয়েকগুণ বেড়েছে। তাই বড়-বড় শহরের চেয়েও বেশি বর্জ্য তৈরি হয় এখানে। কিন্তু ময়লা ফেলার জন্য ডাম্পিং ব্যবস্থা নেই। তাই একটু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আশা করছি এক বছরের মধ্যে বর্জ্য ফেলার জন্য নিরাপদ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা হয়ে যাবে।