চুরির ঘটনায় হয় না তদন্ত, ধরা পড়ে না চোর!


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


চুরির ঘটনায় হয় না তদন্ত, ধরা পড়ে না চোর!
বন্ধ মার্কেট থেকে তোলা

গাজীপুরের  টঙ্গীতে বিভিন্ন সময় স্বর্ণের দোকানে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে, মামলার পর তদন্ত ও চোর গ্রেফতারের নজির চোখে পড়ে না। চলতি বছরে স্বর্ণেও দাম কয়েক বার বৃদ্ধি হলে চুরির ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। চোররা বিচ্ছিন্নভাবেই স্বণের দোকান গুলোতে টার্গেট করে চুরির ঘটনা ঘটায়, যার সাথে তাদের কোন যোগসূত্রই থাকে না। দোকান গুলোতে সিসিটিভি থাকা সত্ত্বেও চোর সনাক্ত বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয় না। ফলে চুরি হওয়া স্বর্ণের দোকান মালিকরা পড়েন বিপাকে।

টঙ্গী বাজার এলাকার একটি দোকানে প্রায় দেড় বছর আগে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ নেন ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার জাহিদ ফকির (২৯)। কাজের সুবাদে দোকান মালিক ইউসুফ আলীর আস্থা অর্জন করেন। পরে সুযোগ বুঝে গত ২৯ ডিসেম্বর গয়নার দোকান থেকে ৭২ ভরি স্বর্ণ চুরি করে চোর চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় ২ জানুয়ারি টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দোকান মালিক ইউসুফ আলী।

তিনি বলেন, আমার দোকানে থাকা কর্মচারী ও বাইরের একটি চোর চক্রের যোগসাজসে প্রায় ষাট লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়। মামলার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও ধরা পরেনি চোর। আমি অনেকটাই নিঃস্ব হয়ে গেছি।

মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে থাকা থানার উপপরিদর্শক(এসআই) সাব্বির হোসেন বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে জাহিদের ছোট ভাইকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ওই চুরির ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ পাওয়া যায়। মামলায় আসামি দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

থানা সূত্রে জানা যায়, বিগত পাঁচ বছরে বোমা ফাটিয়ে একটিও দোকানে থাকা কর্মচারিদের যোগ সাজসে ২৫টি  স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। 

টঙ্গী বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আজাহার উদ্দিন বলেন, টঙ্গীর স্বর্ণের দোকান গুলতে প্রতিনিয়তই স্বর্ণ ও নগদ টাকা চুরির ঘটনা ঘটছে। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা প্রতিটি দোকানে সিসিটিভি লাগালেও চুরি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। মামলায় ঝামেলা এড়াতে অনেক ব্যবসায়ী মামলা করেও পরে মামলা তুলে নিয়েছেন।পুলিশ চোরদেও ধরতে পারছে না।

ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত কয়েক বছরে ভরিতে স্বর্ণের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। তাছাড়া নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নত না হওয়ায় চোর চক্রের সদস্যরা তৎপর। হত্যা বা ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধিদের যতটা দ্রত চিহ্নিত করা যায়, চুরির ঘটনায় সেভাবে চিহ্নিত হয় না। তাই চুরির মতো অপরাধ এখন বেশি ঘটছে। তবে স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ীদের দায় আছে বলে মনে করেন তিনি।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো.আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মামলাটি তদন্তাধিন রয়েছে। পূর্বে হওয়া মামলা গুলোর কয়েকটি নিষ্পত্তি জন্য পুলিশ কাজ করছে।