মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:১০ অপরাহ্ন, ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
সংঘর্ষ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারও আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। এতে ককটেল ও গুলিবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। 


মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুন্সিকান্দি, বেহেরকান্দি, ঢালিকান্দি নোয়াদ্দা ও লক্ষ্মীদেবী গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় দু পক্ষের গুল্লিবৃদ্ধরা হলো ফারুক হোসেন, প্রাণ মোল্লা ,সুমন মোল্লা।


দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নটির বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারী এবং একই উপজেলার আ.লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়নটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার সাথে বিরোধ চলে আসছে।


প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা  জানান,ইউনিয়নটির  আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারী এবং সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার পক্ষের মধ্যে এক যুগ ধরে বিরোধ চলে আসছে।সামান্য বিষয় নিয়ে প্রায় সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় তারা । গত ২৪ জানুয়ারী মহসিনার সমর্থক জিয়া সরকার নামে একজনকে কুপিয়ে এবং গুলি করে আহত করে রিপনের ভাই সিপন পাটোয়ারী।  এর পর থেকে সমগ্র ইউনিয়নে উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার সকালে রিপনের এক সমর্থককে মারধর করে মহসিনার লোকজন।পরে দুপুরের দিকে রিপন পাটোয়ারী লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে কংশপুরায় হামলা শুরু করে। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।মুহুর্তেই ইউনিয়নটির মুন্সীকান্দি, বেহেরকান্দি, ঢালিকান্দি,নোয়াদ্ধা ও লক্ষিদিবি গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।


এক পর্যায়ে গ্রামে গ্রামে বাড়িঘর ভাঙচুর,লুটপাট,ককটেল বিষ্ফোরণ ও গোলাগুলি শুরু হয়। গ্রাম গুলো যেন রনক্ষেত্রে পরিনিত হয়। এতে কল্পনার পক্ষের লোকজনের বেশি ক্ষতি হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে।আহতরা গ্রেপ্তার এড়াতে গোপনে হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেয়।


মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক বলেন,মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে দুজন হাসপাতাল আসে। ওই দুটি ছেলের চোখের মধ্যে লোহাজাতীয় কিছু আটকা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


ইউনিয়নটির ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শওকত দেওয়ান বলেন, দুপুর রিপন চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহীনির নেতা তার আপন ছোট ভাই শিপন পাটোয়ারী নেতৃত্বে হঠাৎ করে গ্রামের নিরহ মানুষের বাড়িঘরে হামলা,  ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু হয়।ক্ষতিগ্রস্থ্যরা প্রতিহত করতে গেলে তাদের উপর ককটেল নিক্ষেপ ও গুলি চালায়।


এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান জনবাণীকে বলেন, কয়েকদিন যাবত  ওই দুপক্ষের মধ্যে  উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার রিপন হোসেন পক্ষের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে হামলা শুরু করে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ করা হয়নি। পুলিশের হাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ফুটেজ এসেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।