আলুর দেশে সরিষার বাম্পার


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০:৫৯ অপরাহ্ন, ৯ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


আলুর দেশে সরিষার বাম্পার
সরিষা

সারা বংলায় আলুর জেলা হিসেবে পরিচিত মুন্সিগঞ্জ। প্রতিবছর লোকসানের ভরতুকি গুনায় আলু চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চাষীরা। অন্যদিকে কম খরচে লাভ বেশি হওয়ার কারনে চাষিরা এখন সরিষা চাষে ঝুঁকছেন । গেলো বছরের তুলনায় এবার এ জেলায় এক হাজার ১৩ হেক্টর বেশি জমিতে হয়েছে সরিষার আবাদ।


কৃষি অফিস জানায়, এবছর জেলার ছয় উপজেলায় হয়েছে সরিষার চাষ। বাজারে সরিষার চাহিদা থাকায় কম খরচে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। গত বছর জেলার তিন হাজার ৪৯ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৮২ হেক্টরে। এবছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা চার হাজার ৫৮৩ টন।


জেলা সদর, সিরাজিদিখান ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সংলগ্ন পদ্মা চরসহ আশপাশের অধিকাংশ জমিতে হলুদের ছড়াছড়ি। কোথাও মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছি, কোথাও বা পাখিদের কলতান। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। এক কথায় বলা যেতে পারে, আলুর দেশে  সরিষা আবাদে বাম্পার ফলন।


চাষীরা বলেন, আমরা মূলত সরিষা চাষ করে থাকি বেশি লাভের আশায়। আর এটি চাষে খরচও তুলনামূলক অনেক কম। গত বছর চাষে খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা। আর লাভ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। আলু চাষে লোকসানে পরতে হয়। সরিষা বীজ ও তেলের দাম বাজারে ভালো রয়েছে। তাই সরিষা চাষে আমাদের লোকসানের কবলে পড়তে হচ্ছে না।


কৃষকরা বলেন, আগে আলু চাষ করতাম। কিন্তু বছর বছর আলু চাষে লোকসান হচ্ছে। এখন সরিষার তেলের দাম বেড়েছে। যে কারণে সরিষার দাম বেশি। এজন্য সরিষা চাষ করে আমাদের ব্যবসা বেশি হয় । দেখা গেছে পাঁচ বিগা জমিতে আলু চাষ করলে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, সে জমির আলু বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা। আর সরিষা চাষে খরচ হয় ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয় ১৫-২০হাজার টাকা। সরকারিভাবে যদি আমাদের সহযোগিতা করা হয় তবে আগামীতে চাষাবাদ আরও বাড়বে এমন দাবী কৃষকদের।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম ওয়াহিদুর রহমান জনবানীকে জানান, বিগত কয়েকবছর ধরে সরিষার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। যেকারণে এবার আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো রোগবালাইয়ের খবর পাওয়া যায়নি। 


আমাদের পরামর্শক্রমে কৃষকরা যেন স্থানীয় জাতের সরিষার পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা (যেমন-বারি ১৪, বারি ১৬-১৮, বিনা-৪, বিনা-৯) আবাদ ও বীজ সংরক্ষণ করেন। উচ্চ ফলনশীল বীজ সংরক্ষণ করলে পরিবর্ততে তারা সে বীজ ব্যবহার করতে পারবে। ভালো ভাবে চাষ করলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে। কৃষকরা বিনামূল্যে বীজ, সার পেয়ে থাকেন। এবছরও অনেক কৃষক পেয়েছেন। সরিষার চাষ বাড়াতে কৃষকদের যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি অফিস সহযোগিতা করবে।


আরএক্স/