গৌরীপুরে বিদ্যুতের খুটিকে কেন্দ্র করে খুন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩


গৌরীপুরে বিদ্যুতের খুটিকে কেন্দ্র করে খুন
স্বজনদের আহাজারি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বিদ্যুতের খুটি স্থাপন নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় সাজ্জাদুল হক (৫৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগে অন্তত ২০টি ঘর পুড়ে গেছে।


রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের পাঁচাশি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সাজ্জাদুল হক ওই এলাকার তাহির উদ্দিনের ছেলে।


ওই দিন বেলা ৩ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজ্জাদুল হক মারা যায়। এই ঘটনায় আহত তিন জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।


গৌরীপুর থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনার পর অগ্নিকান্ডে অন্তত ২০ টি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।


এবিষয়ে নিহত সাজ্জাদুল হকের বড় ভাই এনামুল হক বলেন, প্রায় ৩০০ একর জমিতে বোরো আবাদ করার জন্য একটা ট্রান্সফরমার'র আবেদন করেছিলাম। সেই অনুযায়ী পিডিবি ট্রান্সফরমান অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু, একটা পক্ষ বাধা দিয়ে আসছিল। এই নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত ঝাঁমেলা চলে আসছিল। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল আমিন জনি মিমাংসা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষরা তা মানেনি। 


তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন পিডিবির ঠিকাদার শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করেন। এসময় স্থানীয় রায়হান, শিমুল, উজ্জল, সুজন, বাবুলসহ কয়েক মিলে ঠিকাদারকে খুটি স্থাপনে বাধা দেন। এসময় আমার ভাই, বাতিজাসহ কয়েকজন মিলে ঘটনাস্থলে গেলে রায়হান, শিমুল, উজ্জল, সুজন, বাবুলরা অতর্কিত দা বল্লম নিয়ে হামলা করে। এসময় হামলাকারীরা আমাদের সবার উপর হামলা করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় আমার ভাই সাজ্জাদুল হককে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আমাদের ৫ থেকে ৭ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার পর আমার ভাই সাজ্জাদুল হক মারা যায়।


রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল আমিন জনি বলেন, বৈদ্যুতিক খুটি রাস্তার পাশে সরকারী জায়গায় স্থাপন করার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারপরেও একটি পক্ষ বাধা দিয়ে আসছিল। এই নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে বেশ কিছুদিন যাবত ঝাঁমেলা চলে আসছে। বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্ত, এতে কাজ হয়নি। আজ ঘটনাস্থলে আসার আগেই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে, ঠিকাদারের খুটি স্থাপনের নিষেধাজ্ঞা ছিল কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, মারামারির পরেও একটি খুটি স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, দুই পক্ষের মারামারির আগেই আমরা ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছিলাম। পরে দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে। ওই জায়গায় খুঁটি স্থাপন নিষেধ ছিল কিনা জানতে চাইলে পরে কথা হবে বলে লাইন কেটে দেন। পরে অনেকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।


ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী ইমতিয়াজ মামুন বলেন, ওই খুটি স্থাপন নিয়ে আগে থেকেই স্থানীয় দুই পক্ষের ঝাঁমেলা ছিল। তাই, ঠিকাদার হারুন অর রশিদকে ঝাঁমেলা না মেটা পর্যন্ত খুটি স্থাপনের নিষেধ দেয়া ছিল। এর চাইতে বেশি কিছু আমার জানা নেই।