আক্কেলপুরে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, ৯ই মার্চ ২০২৩
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের গুড়-ম্বা পূর্বপাড়া গ্রামে স্বামী এশার নামাজ আদায় শেষে বাড়িতে এসে শয়ন কক্ষে দেখতে পায় স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় থানা পুলিশ। ঘটনাটি নিহতের বাবার পরিবারের দাবী তার স্বামী, ভাসুর ও তার স্ত্রী মিলে তাকে হত্যা করেছে।
নিহত মোছা. পান্না (৩১) গুড়–ম্বা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম লালুর স্ত্রী এবং বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার ধামাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। ২০০৯ সালে তাদের বিয়ে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শবে বরাতের রাতে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বাড়ির আঙ্গিনা ভর্তি লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন আক্কেলপুর থানা পুলিশ। ওই শয়ন কক্ষের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে পড়ে রয়েছে পান্নার গলাকাটা মরদেহ। পুরো ঘরের জিনিসপত্র লন্ডভন্ড। ঘরের বাইরে স্বামী লালুকে সান্তনা দিচ্ছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ছুটে আসে নিহতের পরিবারের লোকজন। নিহতের পরিবারের দাবী স্বামী, ভাসুর ও তার স্ত্রী মিলে তাকে হত্যা করেছে।
ঘটনার বিষয়ে স্বামী সিরাজুলল ইসলাম লালু বলেন,‘আমি এশার নামাজে যাওয়ার আগে আমার স্ত্রীকে জীবিত দেখে গেছি। নামাজ ও শবে বরাতের মিলাদ শেষে তবারক নিয়ে এসে দেখি ঘরের মধ্যে তার গলাকাটা লাশ। মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। এসময় বাড়িতে কেউ ছিলনা’।
নিহতের ভাসুর আছাব শেখ বলেন,‘আমার ভাইয়ের কিছু আগেই আমি নামাজে যাই। ভাই আসার অল্প সময় আগেই আমি বাড়িতে আসি। নামাজ শেষে বাড়িতে এসে আমার ভাই তার স্ত্রীর নাম ধরে ডাকতে থাকে। সাড়া না পেয়ে পরে ঘরে ডুকে ঘর লন্ডভন্ড ও লাশ দেখে আমাকে ডাকতে থাকে। ঘরে গিয়ে আমিও দেখি তার স্ত্রীর গলাকাটা লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। তখন আমার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে’।
নিহতের পিতা আনোয়ার হোসেন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,‘ফোনে খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। আমার মেয়ের ভাসুর ও তার স্ত্রী মিলে তাকে হত্যা করেছে’।
নিহতের খালা মোর্শেদা জানায়,‘ পান্না নিঃসন্তান হওয়ায় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলোহ হতো। তার ভাসুর ও জা মিলে পান্নার বাপের বাড়ির জমি লিখে দেওয়ার কথা বলত। এটি নিয়ে আমার ভাগ্নির সাথে তার ভাসুর ও জা খারাপ আচরণ করত। তারাই তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তার স্বামীও জড়িত আছে’।
প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লালু ও তার ভাই নামাজেই ছিলেন। তবে দাম্পত্য জীবনের কলোহের বিষয়েও স্থানীয়দের কিছু জানা নেই।
ভোরে আক্কেলপুর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানা হেফাজতে নিয়ে মর্গে পাঠায়। এঘটনায় রাতেই সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদের নের্তৃত্বে ক্রাইম সিন টিম ও জয়পুরহাট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইসতিয়াক আলম, ডিবি পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।
আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন,‘ প্রথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলোহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, তার ভাসুর, জা ও এক ভাতিজাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে’।