ঢাকাবাসীকে জলমগ্নতা হতে রক্ষায় পূর্ণ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে: মেয়র তাপস
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৪২ পূর্বাহ্ন, ২৩শে মার্চ ২০২৩
ঢাকাবাসীকে জলমগ্নতার দুর্দশা হতে রক্ষা করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্ণ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে নগরীর যাত্রাবাড়ীস্থ ধলপুর আউটফল এলাকায় কেন্দ্রীয় যানবাহন বিরামাগার (মটর গ্যারেজ) এর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
মেয়র তাপস বলেন, "আমরা নর্দমাগুলো পরিষ্কার করছি। ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে খাল ও নর্দমাগুলো পাওয়ার পর হতে আমরা সূচি অনুযায়ী বছরের প্রথম থেকেই এগুলো পরিষ্কার আরম্ভ করি। যাতে করে জলাবাদ্ধতা না হয়। আপনারা দেখেছেন, এরই মাঝে বৃষ্টি হয়েছে কয়েক পসলা। তাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোথাও কোনও জলমগ্নতা হয়নি। এজন্য আমাদের যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সেগুলো আমরা করে চলেছি। যাতে করে আগামী বর্ষা মৌসুমে আমরা পূর্ণভাবে প্রস্তুত থাকতে পারি। আমাদের লক্ষ্য, ঢাকা শহরে অতিবৃষ্টি হলেও আমরা ১৫ মিনিটের মধ্যেই জলমগ্নতা বা জলবদ্ধতা নিরসন করতে পারি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারি।"
কেন্দ্রীয় মোটর গ্যারেজ বিরামাগার সম্পর্কে অবগত করে তিনি বলেন, "এই জায়গাটায় ১৫ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগতরা দখল করে রেখেছিল। আমরা সেটা পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করেছি। এর মধ্যে পাঁচ একর জমিতে আমাদের যারা কর্মচারী তাদেরকে এবং তেলেগু সম্প্রদায়ের ১২৬টি পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। বাকি ১০ একর সাত শতাংশ জমিতে আমাদের সকল যান-যন্ত্রপাতি, গাড়ি রাখার জন্য একটি আধুনিক বিরামাগার স্থাপনের কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি। এটা একটি প্রকল্পের মাধ্যমে করা হবে। এখানে সর্বমোট ৩৩৩ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে।"
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ও যান-যন্ত্রপাতি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আসবে জানিয়ে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, "এর মাধ্যমে টাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সকল গাড়ি, যান-যন্ত্রপাতি রাখতে আর কোনও অসুবিধা হবে না। মেরামত, ধোয়ামোছার জন্য আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা এখানে থাকবে। এখন আমাদেরকে অনেক গাড়িই বাইরে রাখতে হচ্ছে, রাস্তার উপর রাখতে হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে। (কেন্দ্রীয় মোটর গ্যারেজ নির্মাণ সম্পন্ন হলে) এটা আর হবে না। এককভাবে একটি কেন্দ্রীয় বিরামাগারে গাড়ি রাখার সংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।"
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, "এখানে যে তেলেগু সম্প্রদায় রয়েছে তাদের মধ্যে যদিও ১২৬টি পরিবার আমাদের কর্মচারী না। তারপরও মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও আমাদের প্রায় ৮০০ মতো কর্মচারী আছে, তাদেরকেও আমরা এই পাঁচ একরে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। আপনারা দেখবেন, এখানে অনেকগুলো ভবন করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য এখানে আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান ও নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ৫ একর জমিতে নতুন আবাসিক ভবন হবে। সেখানে আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মীদের বরাদ্দ দিব।"
এরপরে মেয়র ধলপুর সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র সংলগ্ন সড়কের নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিদর্শন এবং রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, পুরষ্কার বিতরণী ও শহিদ শামসুন্নেসা আরজু মণি স্মৃতি ট্রাস্ট কর্তৃক জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৫ আসেনর সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, কাউন্সিলদের মধ্যে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো আবুল কালাম অনু, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাদল সরদার ও সংরক্ষিত আসনের লাভলী চৌধুরী, করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিছুর রহমান, অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।