যাত্রী কল্যাণ সমিতির মাসিক রিপোর্ট
মার্চে ৫৪৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৯২
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১০ পূর্বাহ্ন, ৬ই এপ্রিল ২০২৩
মার্চ মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ৫৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫৯২ জন নিহত এবং ১১৬৭ জন আহত হয়েছে। এ মাসে ১৫ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ৯৭ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানোসহ মোট ৯টি কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিদায়ী মার্চ মাসে ৪৮৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৮ জন নিহত, ১১৩৮ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫৩ টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত, ১৫ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ৯ টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ১৪ জন আহত এবং ২ জন নিখোঁজ হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭৯ জন চালক, ১০১ জন পথচারী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১২২ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ১২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯০ জন নারী, ৫০ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন আইনজীবী ও ১ জন প্রকৌশলী এবং ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
যার মধ্যে নিহত হয়েছে ৩ জন পুলিশ সদস্য, ৩ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ২ জন আনসার সদস্য, ১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১৪০ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯৩ জন পথচারী, ৬৭ জন নারী, ৩৭ জন শিশু, ৪২ জন শিক্ষার্থী, ২৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯ জন শিক্ষক, ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৩ জন চিকিৎসক, ১ জন সাংবাদিক, ২ জন আইনজীবী ও ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ৬৬৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ১৬.৮১ শতাংশ বাস, ২৮.২৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৪.৬৫ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৩.৭৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৩.১২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৯.৩০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
দুর্ঘটনার ৫৭.৪৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫.১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৪২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৬৫ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং ১.২৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩.০৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.২০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৫.১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.১৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.২৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.২৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, মার্চে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ :
১. চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানো।
২. বেপরোয়া গতি ও বিপজ্জনক অভারটেকিং।
৩. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো।
৪. ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল।
৫. চালকের কর্মঘণ্টা ও বেতন সুনির্দিষ্টি না থাকা।
৬. রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা। রাস্তার পাশে হাট-বাজার।
৭. যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা।
৮. ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা।
৯. ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি ফলে সড়কে দুর্ঘটনা ক্রমবর্ধমান।