পালিয়েছে সোনা চোরাকারবারিদের গডফাদার দোলন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, ১২ই এপ্রিল ২০২৩


পালিয়েছে সোনা চোরাকারবারিদের গডফাদার দোলন
এনামুল হক খান দোলন ওরফে চোরা দোলন

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর চোখে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে সোনা চোরকারবারিদের গডফাদার এনামুল হক খান দোলন ওরফে চোরা দোলন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে একটি  ফ্লাইটে কুখ্যাত এই চোরকারবারি ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছে। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে সোনা চোরচালান চক্রের ছত্রছায়ায় দেশটিতে অবস্থান করছে বলে একটি সুত্র জানিয়েছে। দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করলেও ব্যাংককে আত্মগোপনে থাকা চোরা দোলনকে খুজছে থাই পুলিশ। 


সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে, সোনা চোরাচালানের মূল হোতা দোলন ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না সোনা পাচার। শুল্ক গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারির মধ্যেও শুল্ক ফাকি দিয়ে আসছে সোনা। বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে সোনা পাচার হচ্ছে পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে। চোরাচালানে জড়িত সোনা ব্যবসায়ী দোলনের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে সোনা চোরাচালানের অব্যাহত রেখেছে দোলন। তার মালিকানাধীন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভার্স ও শারমিন জুয়েলার্সের আড়ালে তিনি স্বর্ণ পাচার সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দোলেনর সোনা চোরাচালানের বিষয়ে গত সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই  তিনি ব্যাংকক পালিয়েছেন। থাইল্যান্ডের সোনা চোরচালান চক্রের ছত্রছায়ায় থাকা দোলনকে থাই পুলিশ খুঁজছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। 


শুল্ক গোয়েন্দারা মাঝে মধ্যে চোরাচালানের সোনা জব্দ করছেন। বাহকদের তুলে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। মামলা হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু চোরাচালানের মূলহোতা এনামুল হক খান অধরাই থেকে যাচ্ছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজরদারিতে রয়েছেন সোনা চোরকারবারিদের  গড ফাদার দোলন। 


কাস্টমস গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তর সুত্র জানিয়েছে, এনামুল হক খান দোলন দুবাই এবং সিঙ্গাপুর সিন্ডিকেটের সহায়তায় দুবাই এবং সিঙ্গাপুর হতে বাংলাদেশে আগমানকারী বিভিন্ন যাত্রীর মাধ্যমে সোনা ও অলংকার দেশে পাঠান। এবং বিধি বর্হি:ভূত ভাবে মূল্য পরিশোধসহ বিদেশে অর্থ পাচার করেন। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এনামুল হক খান দোলনের মানি লন্ডারিংয়ের সুনিদিষ্ট তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইল্টেলিজেন্স ইউনিট। তার বিরুদ্ধে দুবাই ভিত্তিক স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের অর্থ পাচার প্রতিরোধ ইউনিট। 


চোরাচালানের রহস্য উন্মোচনের জন্য দোলনকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মজুদ সব স্বর্ণের হিসাব নিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন তিনি অবৈধ কারবার চালিয়ে গেলেও এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।


গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দেশে-বিদেশে অন্তত অর্ধশতাধিক গডফাদার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। এসব গডফাদারদের শনাক্ত ও পরিচয় বের করা হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ও অনেক গডফাদার দেশের বাহিরে থাকার কারণে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। অবৈধ ভাবে আসা সোনার টাকা দিয়ে অস্ত্র ও মাদক কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সুত্র।