কাপ্তাই লেকে শামুকভাঙা পাখির ঝাঁক
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:২২ পূর্বাহ্ন, ২০শে এপ্রিল ২০২৩
বড় আকারের এ পাখিটির নাম শামুকভাঙা বা শামুকখেকোও বলা হয়। ইংরেজি নাম Asian open-bill। বৈজ্ঞানিক নাম Anastomus oscitans,শরীরের মাপ ৯৯ সেন্টিমিটার। মাটিতে দাঁড়ানো অবস্থায় এর উচ্চতা শরীরের মাপের সমান।
বকের মত বড়সড় এ পাখিটির মধ্যে নিরীহ ভাব আছে। মাথার চাঁদি থেকে ঘাড়-গলা-বুক-পেট হয়ে লেজের তলা পর্যন্ত সাদা। লেজের তলা ও উপরের কিছুটা অংশ আবার কালো। ডানা বোজানো অবস্থায় অধিকাংশ সাদা, শুধু প্রান্তদেশ কালো। ঋতুভেদে আবার এদের শরীরের রং কিছুটা পরিবর্তন হয়।
শামুকভাঙা মূলত এক ধরনের পাখি। এরা জলাশয় চলাফেরা করে,এদের খাদ্যতালিকায় আছে মাছ, কাঁকড়া, শামুকের ডিম, কচ্ছপের ছোট ছানা। শক্ত ঠোঁট দিয়ে এরা শামুক ভেঙে খেতে পারে। ঝাঁক বেঁধে যখন এরা খাবার সংগ্রহ করে তখন দেখতে ভারি সুন্দর লাগে।
প্রতিবছর রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকে বিভিন্ন স্থানে এদের দেখা যায়,এরা বাসা বাঁধে ভাদ্র মাসে। জ্যৈষ্ঠ মাসেও বাসা করতে দেখা যায়। দুজনে মিলে বাসা সাজায়। পুরুষ পাখিটি উপকরণে বেশি আনে। বাসা বাঁধতে সময় লাগে ৭-৯ দিন। ডিম পাড়ে দুই থেকে চারটি। ডিমের রং ঘোলাটে সাদা। ৩০-৩৩ দিনে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ৫০-৬০ দিনে। বড় আকারের এ পাখিটি দলে থাকে সব সময়। দলনেতা দল চালায়। শামুকভাঙা বাংলাদেশে এখনো বেশ দেখা যায়। তবে সংখ্যায় কম। হাওরাঞ্চলে বিচরণ বেশি। খাবার বা বাসা করার মতো গাছেরও অভাব নেই।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শামুকভাঙা পাখি দেশে নেই বললেই চলে,মাত্রাতিরিক্ত শিকারের কারণে এদের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। মানুষের সচেতনতায় বর্তমানে সংখ্যা বাড়লেও এখনও শিকার চলছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হল এদের খাদ্যাভাব বা খাবারের সংকটে লোকালয়ে চলে আসা।যা শিকারের অন্যতম কারণ।