‘পমপম’ গ্রুপের ৯ সদস্য গ্রেফতার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:০৬ অপরাহ্ন, ২২শে মে ২০২৩


‘পমপম’ গ্রুপের ৯ সদস্য গ্রেফতার
তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনায় সিআইডির হাতে গ্রেফতারকৃতরা। ছবি: সিআিইডি

হাজার হাজার কিশোরী-তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করে দীর্ঘদিন ধরে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও আদায়ের পাশাপাশি অর্থ দাবি করতো ‘পমপম’ নামে একটি আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাম গ্রুপ। এ ছাড়াও এসব ছবি-ভিডিও বিক্রি করে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নিয়েছে বলে জানা গেছে। 


চক্রটির মূলহোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতারের পর এমনটা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার (২২ মে) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ কথা জানান।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ‘পমপম’ গ্রুপের মূলহোতা মার্ক-সাকারবার্গ ওরফে আবু সায়েম, শাহরিয়ার আফসান অভ্র, বোগদাদী শাকিল, ডিটিআর শুভ ওরফে মশিউর রহমান, মো. জসীম, ক্যাকটাস ওরফে কেতন চাকমা, এল ডোরাডো ওরফে শাহেদ, তুর্য ওরফে মারুফ ও মিঞা ভাই ওরফে নাজমুল সম্রাট।


সিআইডি প্রধান আলী মিয়া বলেন, অভিভাবকদের রাত জেগে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের কথা বলতেন ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরী-তরুণীরা। অভিভাবকরা নিশ্চিতে থাকতেন তাদের সন্তান ফ্রিল্যান্সিং করছেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের আড়ালে তারা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও দিতে বাধ্য হতেন।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আইডি হ্যাক করে ‘পমপম’ নামের টেলিগ্রাম গ্রুপে তাদের গোপন ছবি ও ভিডিও নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ দাবি করতো। অর্থ দিতে না পারলে ভিডিওকলে এসে আপত্তিকর দৃশ্য করতে বাধ্য করতো। 


সিআইডি প্রধান বলেন, গ্রুপটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে  ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কেবল টাকাই নয়, চক্রটি ওইসব ভিডিও দেশে-বিদেশে বিক্রি করেও কোটি কোটি টাকা আয় করেছে।


মাসে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে বাহিরের কয়েকটি দেশের অসংখ্য ক্রেতা পমপম গ্রুপটির সদস্য হয়েছেন। তারা অল্পবয়সী মেয়েদর আপত্তিকর ওইসব কনটেন্ট কিনে সংরক্ষণ করেন। 


তিনি জানান, চক্রটির মূলহোতা মার্ক-সাকারবার্গ নামের এক ব্যক্তি। মার্কের আসল নাম আবু সায়েম। বেকার সায়েম চট্টগ্রামে থাকেন। আইডি অনুযায়ী তার বয়স ২০ বছর। তার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।


সিআইডি প্রধান বলেন, এরই মধ্যে এক ভুক্তভোগী তার এবং তার প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পমপম গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়ায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মার্ক-সাকারবার্গ ও তার দলের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করেন। এ মামলা তদন্তে করতে গিয়ে প্রথমে তাকে পরে তার সহযোগীদের চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।


এ ঘটনায় মানিলন্ডারিং তদন্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সিআইডি প্রধান। কেবল টেলিগ্রাম চক্রের হোতারাই নয়, ফলো দ্য মানি করে তাদের দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


জেবি/ আরএইচ/