বেড়ায় দুধ উৎপাদনে লোকসানে খামারিরা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, ২৭শে মে ২০২৩


বেড়ায় দুধ উৎপাদনে লোকসানে খামারিরা
দুগ্ধ খামার

হাফ লিটার সেভেন-আপের দামে এক লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। পানির দামে দুধ বেচে উৎপাদন খরচ না ওঠায় লোকসান গুনতে গুনতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে দুগ্ধ সমৃদ্ধ পাবনার বেড়া উপজেলার খামারিদের। প্রায় ৩ হাজার দুগ্ধ খামারি রয়েছে এ উপজেলায়। 


যার অধিকাংশই যমুনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে অবস্থিত। বাজারে সব ধরনের গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও কিছুদিন ধরে তরল দুধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান গুলো যেমন ব্র্যাক, প্রাণ, আকিজ , আড়ং , মিল্ক ভিটা সহ অন্যান্য কোম্পানি প্রতি লিটার দুধের দাম ৫ টাকা করে লিটার প্রতি কমিয়ে দিয়েছে। 


বাজারে খুচরা প্রতি লিটার দুধ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও দেশের বিভিন্ন মিল এবং দুধ ব্যাবসায়ীরা খামারিদের প্রতি লিটার দুধের দাম দিচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হিসেবে। এতে দুগ্ধ খামারিদের উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে জানিয়েছেন তারা। 


খামারিরা জানান,খামার করে গাভী লালন-পালন করে আর দুধ বেচে দীর্ঘদিন লোকসান গুনতে গুনতে এখন পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ কারণে অনেকেই তাদের গাভী গুলো বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। গো- খাদ্যের ওপর বাজার মূল্যের সঙ্গে গাভী পালনের খরচ সামাল দিতে না পেরে ইতিমধ্যেই অনেক ছোট খামারিরা গাভী বিক্রি করে দিয়েছেন। 


উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে  দুধ সংগ্রহকারী দুধ ব্যাবসায়ী নাকালিয়া বাজারের মনত দাস বলেন,খামারিদের কাছ থেকে সারা বছর দুধ পাওয়ার জন্য,তারা অধিকাংশ খামারিকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম (দাদন) দিতে হয়। বিনিময়ে সারাবছর বাজার মূল্যের চেয়ে প্রতি লিটারে দুই তিন টাকা কম দিয়ে দুধ নিয়ে থাকেন। 


প্রতি সপ্তাহে দুধের হিসাব করে একটা নিদিষ্ট পরিমাণ টাকা দাদনের টাকা থেকে কেটে রাখা হয়। যেসব খামারিরা দাদন নেন না তাদের লিটার প্রতি দুই তিন টাকা বেশি দেওয়া হয়। মালদাহ পাড়ার শফি মেম্বর বলেন,খামারিদের প্রতি লিটার দুধের দাম নির্ধারণ করে যে হারে দাদন দেওয়া হয়,ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার মুনাফা সে হিসেবে লিটার প্রতি দুধের দাম পড়ে যায় ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। প্রাণ,আকিজ, ইত্যাদি কোম্পানি গুলো দুধের ফ্যাট অনুযায়ী দাম দিয়ে থাকে লিটার প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।


এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা,মিজানুর রহমান বলেন, মনিটরিং ব্যবস্থা  খুবই দূর্বল। গো-খাদ্যর দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। কমার কথা নেই,তাছাড়া দুধের উৎপাদন বেশি,ক্রেতা কম হওয়ায় দুধের দাম কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে। তবে এক লিটার দুধের দাম এক লিটার সেভেন-আপের চেয়েও কম যা বড়ই দুঃখের বিষয়।


আরএক্স/