গোপালগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ১৪


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, ১৭ই জুলাই ২০২৫


গোপালগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ১৪
সংগৃহীত ছবি।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার গোপালগঞ্জে ভয়াবহ সহিংসতা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সারাদিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরে সন্ধ্যায় সরকার ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে, যা বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।


আরও পড়ুন: থমথমে গোপালগঞ্জ, চলছে কারফিউ


গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কারফিউ ঘোষণা করা হয় এবং বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জেলা। এদিকে বুধবার রাতেই যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৪ জনকে আটক করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জের ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান।


এ দিকে চলমান কারফিউয়ে জেলায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। বুধবার রাত থেকে সীমিত আকারে রিকশা চলাচল করলেও অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। বন্ধ ছিল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হয়নি। 



সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে মানুষের আনাগোনা নেই বললেই চলে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। জেলা কারাগারের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন রয়েছে।


জানা যায়, এনসিপির ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে বুধবার গোপালগঞ্জে ওই হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।


গোপালগঞ্জে দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিহতরা হলেন- জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইদ্রিস মোল্যার ছেলে সোহেল মোল্যা।


বুধবার গোপালগঞ্জে সভা শেষে ফেরার পথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গাড়িবহরে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এতে হামলাকারী ও পুলিশের মধ্যে দিনভর সংঘর্ষ চলে। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।


আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে


সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সহায়তায় গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন এনসিপির নেতারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এনসিপির নেতা আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম সেনাবাহিনীর একটি সাঁজোয়া যানের (এপিসি) মধ্যে প্রবেশ করছেন। এরপর গোপালগঞ্জ থেকে গাড়িবহর নিয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে খুলনা শহরে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা খুলনা সার্কিট হাউস ও একটি হোটেলে উঠেন।


গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।


এসডি/