মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে: রাষ্ট্রপতি
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মাতৃভাষা
ও নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশসহ সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববাসীকে সোচ্চার
হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
২১
ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২ উপলক্ষে রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি)
দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘কালের আবর্তে পৃথিবীতে অনেক ভাষাই আজ বিপন্ন। একটা ভাষার বিলুপ্তি মানে একটা সংস্কৃতির বিলোপ, জাতিসত্তার বিলোপ, সভ্যতার অপমৃত্যু। তাই মাতৃভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশসহ সকল জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে। ’
বিশ্বের
বিশ্বের বিকাশমান ও বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলোর সংরক্ষণে বাংলাদেশের উদ্যোগের কথা তুলে
ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্বের বিকাশমান ও বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলোর মর্যাদা ও অধিকার
রক্ষায় গবেষণার জন্য ২০০১ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
’
‘বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর রয়েছে
নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। এর মধ্যে অনেকগুলো ভাষার সুনির্দিষ্ট লিখিত রূপ নেই। এসকল
ভাষার সংরক্ষণ ও উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ’
আবদুল
হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর
একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। এ চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী
মানুষের সাথে নিবিড় যোগসূত্র স্থাপিত হোক, লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো আপন মহিমায় নিজ নিজ
সম্প্রদায়ের মধ্যে উজ্জ্বীবিত হোক, গড়ে উঠুক নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য বিশ্ব;
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এ কামনা করি। ’
সর্বস্তরের
বাংলা ভাষার শুদ্ধ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘যে বাংলা
ভাষার জন্য জাতির সন্তানরা জীবন দিয়েছে তার উন্নয়নে সর্বস্তরে শুদ্ধ বাংলা প্রচলনের
ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ’
নতুন
প্রজন্মের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের
বাসিন্দা। তাই উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে বর্তমান প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক
যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত বিভিন্ন ভাষার ওপর প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
নিজ ভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুভাষিক শিক্ষার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ
করতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে। ’
স্বাধীনতার
সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য বর্ণণা করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন ছিল আমাদের
মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য
রক্ষারও আন্দোলন। আমাদের স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অমর একুশের অবিনাশী
চেতনাই যুগিয়েছে অফুরন্ত প্রেরণা ও অসীম সাহস। ফেব্রুয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই অর্জিত
হয় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে আসে বাঙালির চিরকাঙ্ক্ষিত
স্বাধীনতা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান। ’
২১
ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার
আদায়ে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ জীবন উৎসর্গকারী সকল ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার
সাথে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি।
ওআ/