ভালো নেই মুন্সীগঞ্জের পত্রিকার হকাররা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৪০ অপরাহ্ন, ২১শে জুন ২০২৩


ভালো নেই মুন্সীগঞ্জের পত্রিকার হকাররা
ছবি: জনবাণী

মহামারি করোনার আগের তুলনায় ছাপানো পত্রিকা বিক্রি কমে গেছে। এতে কষ্টে আছেন হকাররা। নিরুপায় হয়ে অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। করোনা ভাইরাস, প্রযুক্তির বিকাশ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সংবাদপত্রের মূল্যবৃদ্ধি- এ বিষয়গুলোই গত তিন বছরে পত্রিকার পাঠক কমে যাওয়ার মূল কারণ।


পত্রিকা কয়েক হাত ঘুরে পাঠকের হাতে পৌঁছে- এ কারণে করোনার সময় অনেক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ছাপানো পত্রিকা পড়া অব্যাহতভাবে পাঠক কমায় সংবাদপত্র বিপণন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা।


পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলছে না। ফলে পত্রিকা বিতরণকারীরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। আয় না হওয়ায় নতুন করে এ পেশায় কেউ আসতে চান না। ফলে হকারের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। মুন্সীগঞ্জে ৭-৮ হাজার পত্রিকা পাঠক ছিলেন। 


করোনা শুরুর পর এ সংখ্যা কমতে কমেছে। এর মধ্যে পত্রিকার কাগজ-কালিসহ অন্য কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিতে পত্রিকার দামও বেড়েছে। এ ছাড়া অনলাইনে পত্রিকা পড়ার সুযোগ থাকায় অনেকেই ছাপানো পত্রিকা পড়ছে না। মুন্সীগঞ্জে হকার আছে ৫০/৬০ জন। যারা আছেন, তারাও অন্য পেশায় ভালো সুযোগ পেলে চলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।


সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় সংবাদপত্র এজেন্ট পত্রিকা বিতানের সত্বাধিকারী রবীন্দ্র বাবুর সঙ্গে। তিনি বলেন, পাঠকরা অনলাইনেই এখন সব পত্রিকা পড়তে পারেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই ছাপানো পত্রিকা পড়া বাদ দিয়েছেন।


হকার করিম বলেন, বহু বছর যাবত এ ব্যবসায় জড়িত। বর্তমানে ব্যবসা ভাল না। পত্রিকার দাম বাড়ায় গ্রাহকের সংখ্যা কমে গেছে। ৪০০ পত্রিকা আগে চালাইতাম। এখন চলে ২৫০টি। আগে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা আয় হতো এখন ৭৫০ টাকার মত আয় হয়।


আরও পড়ুন: পত্রিকার সার্কুলেশন নিয়ে হাইকোর্টের রুল, ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাবের নির্দেশ


হকার মহিউদ্দিন বলেন, বাইসাইকেল চালিয়ে করোনার আগে পত্রিকা বিক্রি করে ১০০০ টাকা আয় করতেন। পত্রিকা বিক্রি করে নিজের কমিশনের টাকা বাদ দিয়ে মাসে মালিকের পাওনা সবার আগে পরিশোধ করতেন। তবে পত্রিকার পাঠক কমে যাওয়ায় প্রতি মাসেই তাদের দেনার পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে পত্রিকা বিক্রি করে দিনে ৫শ থেকে ৭০০ টাকা কমিশন পান। এ পেশায় প্রায় ২৬ বছর। 


আক্ষেপ করে মহিউদ্দন বলছিলেন, পত্রিকা চলে কম। এর ওপর জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।


হকার বাতেন বলেন, দিন দিন পাঠক কমে যাচ্ছে। অনলাইনে সব সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। তাই ছাপা পত্রিকা পড়া অনেকে বন্ধ করে দিয়েছে।


ঢাকা বহুমুখী সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়নের নেতা সায়দুর রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির সাথে সাথে কাগজের দাম বাড়ায় দিন দিন পত্রিকা ও হকারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।


এ পেশায় তেমন আয় না হওয়ায় প্রতিনিয়ত হকাররা কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার অবস্থায় আছে। কোনো পত্রিকার পক্ষ থেকে হকারদের সহযোগিতা করা হয়না বলেও জানান তিনি।


জেবি/ আরএইচ/