অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম, হাসপাতালে সন্তান বাঁচানোর আকুতি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:২৬ অপরাহ্ন, ২৪শে জুন ২০২৩


অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম, হাসপাতালে সন্তান বাঁচানোর আকুতি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এক পাষন্ড তার ছয় মাসের অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীকে নিজে ভাই আত্নীয় স্বজনদের নিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। 


স্থানীয়দের সহযোগীতায় অকথ্য নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । সন্তান বাঁচনোর আকুতি আর শরীরের যন্ত্রণায় কাতর নারী বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। 


ভূক্তভোগী বড়গ্রাম ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সবুরের কন্যা মোছাম্মদ লাকী আক্তার (৩২) এঘটনার প্রতিকার চেয়ে মুক্তাগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন । 


থানার অভিযোগ সূত্রে ও জানা গেছে, বখাটে প্রতারক স্বভাবের তার স্বামী স্থানীয় হাসান জোয়ারদারের পুত্র রুকনুজ্জামান রুবেল (৩৯)। তাকে নিয়ে ময়মনসিংহে একটি ভাড়া বাসায় বসবাসকালে ভরণ পোষন পোহাতে টালবাহানা শুরু করে এক পর্যায়ে বাড়ি ভাড়া বাকী রেখে কৌশলে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। তিনিও বাড়িতে এসে স্বামীকে খুঁজে পায়।  


গত ১৭ জুন গভীর রাতে রুকনুজ্জামান রুবেলের বাড়িতে তার অনুপস্থিতেতে বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন হারুন মাষ্টার, নুরজাহান বেগম স্বামী হাসেন জোয়ারদারসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন নিয়ে মোছা লাকী আক্তারের উপর হামলা চালায় এবং বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় বাড়ির বাইড়ে একটি সিড়িতে অবস্থান করেন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোররাতে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।


জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রুকনুজ্জামান রুবেল তার স্ত্রী মোছা লাকী আক্তারের উপর নির্যাতন, হয়রানি, প্রতারণা, প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণসহ অকথ্য নির্যাতন করে আসছিল। দাম্পত্য ও সংসারের সুখের আশায় সকল অত্যাচার নির্যাতন নিরবে সহ্য করে যাচ্ছেন তিনি। এক পর্যায়ে মাত্রার বাইরে চলে গেলে রুবেলের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ময়মনসিংহের কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। 


ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী) ২০০৩ এর ৯(১)। উক্ত মামলায় লাকী অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে রোকনুজ্জামান রুবেলের সাথে তার সখ্যতা হয়। সেই সুবাদে তার সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করত। 


৯ জানুয়ারি ২০২২ বেলা অনুমান ১১টার সময় ময়মনসিংহ কোতয়ালী থানার কাশর এলাকার জনৈক রফিক এর বাসায় নিয়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন ও ঘর বাাঁধার স্বপ্ন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে । পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে সে বিভিন্ন অজুহাতে তালবাহানা করতে থাকে এবং বিয়ে করবে না বলে জানায়। অগত্যা উপরোক্ত ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনসহ তার পরিবারের লোকজনের সাথে আলোচনা করে থানায় অভিযোগ করেন।


এদিকে এই মামলা তুলে নিলে তাকে বিয়ে করবে বলে আশ^াস দেয়। সুখের আশায় তিনি বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন ময়মনসিংহ জেলা বিজ্ঞ নোটারি পাবলিক এফিডেভিট মূলে, যেখানে ২০ লাখ টাকা কাবিন ৫০ হাজার টাকা ওয়াশিল দেখানো হয়।


এদিকে বিয়ের পর থেকেই তাকে নানাভাবে উপরোক্তসহ শারীরিক, মানষিকভাবে নির্যাতন করে আসছে রুকুজ্জামান রুবেল। সম্প্রতি লাকী আক্তার অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি তার স্বামীকে জানালে সে ক্ষুব্ধ হয় এবং নির্যাতন অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে হুমকি ধমকি দেয় যে, বাচ্চা নষ্ট না করলে অর্থাৎ ভ্রুণ হত্যা না করলে তাকে ভরণ পোষণ থেকে বঞ্চিত করা হবে উপরন্তু বাসা ভাড়া পর্যন্ত পরিশোধ করবে না বলে হুমকি দেয়। প্রতিকারের আশায় আবারও স্থানীয় ইউপি মেম্বার, গণ্যমান্যসহ স্মরণাপন্ন হন নারী। তাদের সুষ্ঠু প্রতিকারের কোন কথা মানতে নারাজ রোকনুজ্জামান রুবেল।


এবিষয়ে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বিষয়টি অবগত আছেন জানিয়ে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরএক্স/