ভালুকায় মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা, ছাঁদ থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৩
ময়মনসিংহের ভালুকায় মা-মেয়েসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পৃথক পৃথক এলাকার থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, জামিরদিয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার জাহিদ হোসেনের স্ত্রী সিনথিয়া আক্তার (২৪) ও তার তিন বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা জান্নাত লামিয়া।
ডাকাতিয়া ইউনিয়নের বিন্নরীপাড়া এলাকার আনোয়ার খানের ছেলে আব্দুল্লাহ (১০)। সে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
নুরুন্নাহার আক্তার (৩৪) জেলার তারাকান্দা উপজেলার আব্দুল খালেকের স্ত্রী। সে সপরিবারে ভালুকার কাশর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
ভালুকা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মানিকুল ইসলাম বলেন, জামিরদিয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার জাহিদ হোসেন স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। ১৪ বছর আগে সিনথিয়াকে বিয়ে করেন জাহিদ হাসান। অভাব অনটনের সংসারে প্রায়ই ঝগড়া হতো। স্ত্রী সিনথিয়া একটি চাকরির সন্ধ্যানে ছিলেন। ঘটনার রাতে স্বামী জাহিদ বাসায় ছিলেন না। সিনথিয়া রাতে তার সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা লামিয়াকে নিয়ে বসত ঘরে ঘুমাতে যায়। পরদিন সকাল ১০ টার দিকে ঘরের দরজা না খোলায় প্রতিবেশিরা তাদের ডাকাডাকি করে। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে বাড়ির লোকজন পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্যানের সাথে বাঁধা মা ও শিশুকন্যার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এসআই মো. মানিকুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, আগে মেয়েকে ফ্যানের সাথে ঝুঁলিয়ে পরে সিনথিয়া নিজেও ওই একই রশিতে ঝুঁলে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, নুরুন্নাহার আক্তার দুই সন্তান ও স্বামী আব্দুল খালেককে নিয়ে ভালুকার কাশর এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ঘটনার দিন দুপুরে নুরুন্নাহার ছাঁদে কাপর শুকাতে যায। এসময় পা পিছলে ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। সে ছাঁদ থেকে পড়ে গেছে নাকি হত্যা করা হয়েছে, তদন্তের পর বলা যাবে। নিহতের স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল হোসেন বলেন, উপজেলার ডাকাতিয়া বিন্নরীপাড়া এলাকার আনোয়ার খানের দুই ছেলে হুজাইফা ও আব্দুল্লাহ। দু'জনই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন। ঈদের ছুটিতে তারা বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার বেলা ১১ টার দিকে আব্দুল্লাহ মোবাইলে গেম খেলছিল।
এসময় বড় ভাই হুজাইফা গেম খেলতে দিবে না বলে মোবাইল নিয়ে নেয়। এরই জেরে আব্দুল্লাহ নিজ ঘরের আড়ার সাথে গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ দুপুরের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের জন্য দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।
আরএক্স/