পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৩ বছর


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৩ বছর

আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহের (পিলখানা ট্র্যাজেডি) ১৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে বিপথগামী সদস্যরা কিছু দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে তাণ্ডব চালায়। এ ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলাটি আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায়। এর আগে ২০১৩ সালে বিচারিক আদালতের রায় দেয়। এর ওপর ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০১৭ সালে হাইকোর্ট বিচার শেষ করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, চলতি বছরই আপিল বিভাগে শুনানি হবে। আর আসামিপক্ষের আইনজীবীর আশা, আপিলে ন্যায়বিচার পাবেন তারা।

বাহিনীর নিজস্ব আইনে বিচারের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয় ২০০৯ সালেই। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত ২০১৩ সালে রায় ঘোষণা করে। সেখানে ৮৩৪ আসামির মধ্যে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে কারও কারও সাজা কম ও বেড়েছে। সেই রায় ২০২০ সালে প্রকাশ হয়। এখন আপিল বিভাগে শুনানি অপেক্ষায় রয়েছে আলোচিত এই মামলাটি।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন জানান, আসামিদের সংখ্যা, সাক্ষী ও নথিপত্রের দিক থেকে এটি একটি দীর্ঘ মামলা। এই জন্য বিচারিক কার্যক্রমে সময় লাগছে।

আসামিদের মধ্যে বিচারিক চলাকালীন ২৪ জন মারা গেছেন। পলাতক রয়েছেন ২০ জন। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলাটির বিচারিক আদালতে কার্যক্রম শেষ হয়নি। হত্যা মামলার আসামিরা এই মামলারও আসামি।

এদিকে, নিহতদের স্মরণে শুক্রবার শাহাদতবার্ষিকী পালন করবে বিজিবি। দিনটি পালনের উদ্দেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শাহাদতবার্ষিকীতে দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরসহ সব রিজিওন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কুরআন, বিজিবির সব মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহিদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সব স্থাপনায় বিজিবি পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং বিজিবির সব সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করবেন। এছাড়া বিজিবির সব সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে।

২৫ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বাদ জুমা পিলখানার বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রিত অতিথি, শহীদ ব্যক্তিদের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরত সব অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অংশগ্রহণ করবেন।

ওআ/