শ্রীনগরে পরিবেশবান্ধব ফার্নিচারের চাহিদা বাড়ছে


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, ১৫ই জুলাই ২০২৩


শ্রীনগরে পরিবেশবান্ধব ফার্নিচারের চাহিদা বাড়ছে
পরিবেশবান্ধব ফার্নিচার

শ্রীনগরে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কাঠের রেডিমেট ফার্নিচার। রেডিমেট এসব ফার্নিচারের চাহিদা বাড়ায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র কারখানা ও বিক্রয় কেন্দ্র।

 

উন্নতজাতের কাঠের তৈরি আধুনিক ডিজানের আলমারি, খাটিয়া, সোফা, টি-টেবিল, শোকেজ, ড্রাইনিং চেয়ার-টেবিলসহ প্রয়োজনীয় রেডিমেট আসবাবপত্র ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়ছে। উপজেলাব্যাপী প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদ্র ফার্নিচার কারখানা গড়ে উঠেছে। 


এর মধ্যে শ্রীনগর সদর এলাকাতেই রয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক ফার্নিচারের করাখানা। অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ব্র্যান্ডেড ফার্নিচার কোম্পানির সাথে তাল-মিলিয়ে এখানকার ক্ষুদ্র কাঠশিল্পগুলোও এগিয়ে যাচ্ছে। উদ্যোক্তরা নিজস্ব কারখানায় নিত্য নতুন ডিজাইন আর উন্নতমানের উপকরণ সামগ্রীর ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরীকৃত আসবাবপত্রের নতুন নতুন চমক সৃষ্টি করছেন। 


এতে রেডিমেট ফার্নিচারের প্রতি সাধারণ ক্রেতাদের আস্তা বাড়ছে। রেডিমেটের পাশাপাশি ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কারখানায় যে কোন ধরণের আসবাবপত্র তৈরির অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরপাড়া, ডাকবাংলো, চকবাজার, ধাইসার, দেউলভোগ, শ্রীনগর স্টেডিয়ামসহ এর আশপাশে সড়কের পাশে বিভিন্ন কারখানায় ফার্নিচার তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কাঠমিস্ত্রিরা। 


টুকরো কাঠের ওপর হাতে খোদাই করা নকশার কাজ করছেন অসংখ্য শ্রমিক। এছাড়া বেশ কয়েক স্থানে উন্নতপ্রযুক্তির মেশিনে কাঠের নকশা করা হচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যা ফার্নিচার কারখানাগুলোতে নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে শ্রমিদের। প্রতিটি কারখানায় কাঠমিস্ত্রি সহ ৫ থেকে ৮ জন করে শ্রমিককে কাজ করছেন। 


চোখ ধাধানো কারুকাজ সম্পন্ন নকশা ও নিপুন হতের রং-তুলির পলিশে প্রস্তুত হচ্ছে একেকটি আসবাবপত্র। লিটন বেপারী বলেন, ১৮ বছর যাবত কাঠের ফার্নিচার সাইডে রং-পলিশের কাজ করছি। মহাজনদের কারখানায় তৈরিকৃত বিভিন্ন ফার্নিচার চুক্তিতে রং করে দিচ্ছি। এ কাজের জন্য দৈনিক রোজে ৩ জন শ্রমিক রয়েছে তার। রনি-জনি ফার্নিচারের কর্ণধার শহিদুল ইসলাম বলেন, কারখানায় রেডিমেটের ফার্নিচারের পাশাপাশি ক্রেতাদের পছন্দের ডিজাইন ও কাঠের জিনিসপত্র তৈরির অর্ডার নিচ্ছি। 


এখানে সীমিত লাভে ফার্নিচার বিক্রি করা হচ্ছে। হরপাড়ার নাইদুল ফার্নিচারের কর্ণধার আব্দুল ছালাম বলেন, এ ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে। ৫ জন অভিজ্ঞ শ্রমিক নিয়ে কাঠের ফার্নিচার ব্যবসা করছি। বেশ কিছু কাস্টমারের অর্ডার কাজ করছি। ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে দেশী জাতের সেগুন কাঠের পরিবেশবান্ধব ফার্নিচার সামগ্রী। এই ব্যবসায় এখন অনেকাংশে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ফার্নিচার উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সরকারি নীতির সহায়তা পেলে ব্র্যান্ডেড ফার্নিচার কোম্পানির সাথে সাথে এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র কাঠশিল্পও আর্থিক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারে। কারণ বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। 


তথ্যমতের ভিত্তিতে প্রায় ৯৫ ভাগ নন ব্র্যান্ড আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে এসব ক্ষুদ্র কারখানায়। দেশীয় কাঠের ফার্নিচারের প্রয়োজনীয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেডিমেট ফার্নিচারের দিকে মানুষের আস্তা বাড়ছে। শ্রীনগরে ক্ষুদ্র ফার্নিচার কারখানা গুলোতে ৫ শতাধিকের অধিক শ্রমিক কাজ করছে। এখানে শ্রমিকরা কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের করে অনেকেই হয়ে উঠছেন নতুন উদ্যোক্তা।


আরএক্স/