শ্রীনগরে পানকৌড়ির কলরব,গাছের মগডালে শতশত বাসা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০৯ অপরাহ্ন, ১৭ই জুলাই ২০২৩


শ্রীনগরে পানকৌড়ির কলরব,গাছের মগডালে শতশত বাসা
গাছের মগডালে শতশত বাসা

শ্রীনগরে বর্ষা মৌসুমের জোয়ারের পানি আসার সাথে সাথেই পানকৌড়িদের ব্যাপক আগমন ঘটে। এই অঞ্চলের খাল-বিল, নদী-নালা, জলাধার-পুকুর ও বিখ্যাত আড়িয়ল বিল এখন পানিতে টইটুম্বুর। পানকৌড়ির দল বিলের পানিতে ডুবিয়ে সাঁতার মাছ শিকার করছে। বিল কিংবা জলাধারের খুব কাছাকাছি বিভিন্ন গাছে আবাসন গড়ে তুলেছেন। 


পাণকৌড়িদের কিচিরমিচির কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে এলাকা। উঁচু গাছের মগডালে অতিথি এসব পানকৌড়িরা শতশত বাসা বেঁধেছে। করছে বংশ বিস্তার। লক্ষ্য করা গেছে, শ্রীনগর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গাছে পানকৌড়ির দল স্থায়ীভাবে আবাসন গড়ে তুলেছে। পানকৌড়ির পাশাপাশি গাছে অসংখ্য বাদুর ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ এলাকাটি এখন পানকৌড়িদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। 


লোকালয়ের মধ্যে পানকৌড়ির এমন বিচরণ দেখতে পাওয়াটা অনেক আনন্দের। এখানে নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ায় গাছ কাটা পড়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রাণকৌড়ির উপস্থিতি কম। কলেজটির সাবেক প্রভাষক মাজাহারুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, এক সময় নিজ উদ্যোগ থেকেই এসব পানকৌড়ির সুরক্ষায় কাজ করে এসেছি। তিনি বলেন, পানকৌড়ি সুরক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। তা’না হলে একদিন এসব পানকৌড়ি বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। 


সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আড়িয়ল বিল জুড়ে এখন শুধুই পানি। বিলের জলরাসির ঢেউয়ে সাঁতার কাটছে অসংখ্য পানকৌড়ি। পানকৌড়ির দল বিলের গভীর পানিতে ডুব দিয়ে ছোট ছোট মাছ শিকার করে আনছে। বির্স্তীণ আড়িয়ল বিল জুড়ে পাণকৌড়ির পাশাপাশি বালি হাঁস, মাছরাঙ্গা, সাদা বক, কানি বকসহ নাম না জানা অনেক পাখীর আগম ঘটেছে। 


বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আড়িয়ল বিলের নয়াভিরাম প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত অসংখ্য পর্যটক নৌকা ভ্রমণে আসছেন। সন্ধ্যার সাঁজ পড়তেই শিকারি পানকৌড়ির দলসহ অন্যান্য পাখীর ঝাঁক উড়ে নিজ নিজ নীড়ে ফিরার দৃশ্য ভ্রমণকারীদের নজর কাড়ছে। 


আড়িয়াল বিল এলাকার গাদিঘাট, শ্রীনগর সরকারি কলেজ, কুকুটিয়ার এলাকার বিবন্দী বাজারের পাশে খালের পাশে বসতবাড়ির বেশ কিছু উঁচু গাছে পানকৌড়ির আগম ঘটেছে। এসব স্থানে পানকৌড়িরা বংশ বিস্তারে শতশত বাসা বেঁধেছে। ছানা পানকৌড়িদের আহারের যোগান দিচ্ছে মা পানকৌড়ি। পানকৌড়ির ডাক-চিৎকার ও কলরব দূর থেকেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা পানকৌড়িকে আঞ্চলিকভাবে কাউপানি নামেও ডেকে থাকেন। গাছে এসব পানকৌড়ির হাকডাক ও ডানা মেলে রোদে গা শুকানোর দৃশ্য দেখা যায়। 


পানকৌড়ির মিলন-মেলার এমন অপরুপ নজরকারা দৃশ্য উপভোগ করতে অনেক পথচারী খানিকটা দাড়িয়ে পড়ছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জানায়, বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানি আসার শুরু থেকেই পানকৌড়িরা দল বেঁধে আসতে শুরু করে। 


জলাশয়ের খুব কাছাকাছি বিভিন্ন গাছের চূড়ায় এরা বাসা বাঁধে ও বংশ বিস্তার করে। কার্তিক মাসে খাল-বিলের পানি নামার দিকে পানকৌড়ির দল আস্তে আস্তে অনত্র কোথাও যেতে শুরু করে। তবে শ্রীনগর সরকারি কলেজ, বিবন্দী বাজার এলাকাসহ উপজেলার বেশ কয়েকস্থানে বিভিন্ন গাছে অসংখ্য পানকৌড়ি বছর জুড়ে বাস করছে। এসব স্থানে জলাধার ও বিশাল বিশাল পুকুর থাকার ফলে পানকৌড়ির দল নিরাপদ আবাসন গড়ে তুলেছে।


আরএক্স/