আড়িয়াল বিলের শাপলা কুড়িয়ে চলছে জীবন-জীবিকা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৫০ অপরাহ্ন, ২০শে জুলাই ২০২৩


আড়িয়াল বিলের শাপলা কুড়িয়ে চলছে জীবন-জীবিকা
ছবি: জনবাণী

সকালে সূর্য উঠার আগেই বির্স্তীণ আড়িয়ল বিল ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বেড়িয়ে পরেন শাপলা কুড়াতে শতশত কর্মজীবী মানুষ। কুড়ানো শাপলার বিক্রির আয়ে চলছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা। 


ভরাবর্ষা মৌসুমে আড়িয়ল বিলে প্রাকৃতিকভাবেই অসংখ্য শাপলার উৎপাদন হচ্ছে। বিলে মাছ শিকারের পাশাপাশি দিনের কয়েক ঘন্টা শাপলা কুড়িয়ে আয় করছেন হাজার হাজার টাকা। কুড়িয়ে আনা শাপলা স্থানীয়ভাবে কেনাবেচা হচ্ছে। পাইকাররা এসব শাপলা সংগ্রহ করে রাজধানীর পাইকারীর সবজির বাজারগুলোতে বিক্রি করছেন। 


প্রতিদিন এই অঞ্চল থেকে অন্তত ১০-১২ পিকআপ শাপলা ঢাকায় যাচ্ছে। 


মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার গাদিঘাট, আলমপুর, ষোলঘর, হাঁসাড়া, বাড়ৈখালীসহ আড়িয়াল বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে এসব শাপলার পাইকারি বিকিকিনি হচ্ছে। শাপলা সবজি হিসেবে সু-স্বাদু হওয়ায় খোলা বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আড়িয়াল বিল পাড়ের অসংখ্য কর্মহীন মানুষ বর্ষা মৌসুমে  শাপলা কুড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। 


সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আড়িয়াল বিলে এখন বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। বিলের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য শাপলা কুড়িয়ে আনা হচ্ছে স্থানীয় সড়কের পাশে। দেখা গেছে, হাঁসাড়া-বাড়ৈখালী সড়কের আলমপুর, গাদিঘাট বাজার সংলগ্ন সড়কের পাশে নৌকা ভর্তি শাপলার স্তুপ। নৌকা থেকে শাপলার আটি গুনে-গুনে তোলা হচ্ছে পিকআপ ভ্যানে।


আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন শাপলা বিলে


আলমপুর এলাকার সুমন খান, মো. মোশারফ, নুর হোসেন, আমির হোসেন, শাজাহান, দেলোয়ার হোসেন, বলাই রামসহ অনেকে বলেন, বিলে এখন পানির গভীরতা প্রায় ৬ হাত। এবছর বিলে শাপলার পরিমাণ অনেকাংশ কম। ধারনা করা হচ্ছে কিছুদিন পরেই শাপলা বৃদ্ধি পাবে। আমাদের এলাকায় বর্ষাকালে তেমন কাজ থাকেনা। এ সুবাদে বিনা পুঁজিতে শাপলা কুড়িয়ে বিক্রি করছি। এতে একেকজনের ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা কামাই হচ্ছে। কার্তিক মাস পর্যন্ত আড়িয়ল বিলে শাপলা কুড়াবেন তারা। 


গাদিঘাটের মোয়াজ্জেম, মোশারফ, মো. হোসেন বলেন, এই গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবার শাপলা বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। বিলে মাছ শিকারের পাশাপাশি শাপলা কুড়াচ্ছেন তারা। ৮০টি শাপলায় একেকটি আটি বাঁধা হয়েছে। শাপলার আটি পাইকারের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ১৬-২০ টাকা। 


শাপলার পাইকার চাঁন মিয়া, সেলিম শেখ, মালেক জানান, বিকালে নৌকা থেকে শাপলা সংগ্রহ করে ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ি, শ্যামবাজারসহ বিভিন্ন সবজির পাইকারী হাটে নিয়ে এসব শাপলা বিক্রি করা হচ্ছে। বর্ষার মৌসুমে কয়েক মাস শাপলার ব্যবসা করবেন তারা। গ্রামগঞ্জে কিংবা শহরের মানুষের কাছে শাপলা সু-স্বাদু সবজি হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 


জেবি/ আরএইচ/