কুমারখালীতে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, ৯ই আগস্ট ২০২৩
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের উপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১ টার সময় সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হলরুমে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার আয়োজনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (৭ আগস্ট) সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রী বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে স্কুলের ছাদে ধূমপান করছিলো। সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মসিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান তাদের মুঠোফোনে ভিডিও করেন। পরে ছাত্রীদের ডেকে মারধর করে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সেই সঙ্গে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়াসহ অভিভাবকদের জানানোর ভয় দেখান। অভিমানে বিদ্যালয় ছুটির পর জিনিয়া নামের একজন ছাত্রী বাড়িতে এসে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরদিন মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বেলা দেড়টার দিকে জিনিয়ার মরদেহ নিয়ে বাড়ির সামনে মানববন্ধন শুরু করে গ্রামবাসী। কিছুক্ষণ পর সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ সেখানে আসলে এলাকার সাবেক মেম্বার গাজীর নির্দেশে কয়েকজন তাকে মারপিট করতে শুরু করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা অন্যান্যরা প্রধান শিক্ষককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। তারপর ৩০ মিনিট মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে স্থানীয় সুলতানপুর গোরস্থানে জিনিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সিগারেট খাওয়া নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রীদের শাসন করেছিলো। তারই জের ধরে একজন ছাত্রী আত্মহত্যা করে। ঘটনার সময় প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বিদ্যালয়ে ছিলেন না। তিনি কুমারখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন তার বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পরের দিন তিনি সেই ছাত্রীর লাশের জানাযায় অংশগ্রহনের জন্য গিয়েছিলেন। সেসময় সুলতানপুর এলাকার সাবেক মেম্বার গাজীর নির্দেশে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। সেই ভিডিও নেট দুনিয়াই ভাইরাল হয়েছে। তিনি আমাদের প্রধান শিক্ষক পরিবারের একজন। আমরা প্রশাসনের নিকট জোরালো দাবি জানাচ্ছি এই হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম স্বপন বলেন, আমি দুই তিন দিন অসুস্থ ছিলাম ঢাকাতে। আমি জানার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই ঘটনার সাথে কোন শিক্ষক ও কর্মচারী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আসলেও এই শিক্ষক-কর্মচারীরা কোন এই ঘটনার অপরাধের সাথে জড়িত কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখার জন্য আমি তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছি। এছাড়াও যারা এই প্রধান শিক্ষকের উপরে উপরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
জেবি/এসবি