মাছের দামে আগুন, ফের দাম বেড়েছে ডিম ও বয়লার মুরগি সহ নিত্যপণ্যে


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:১২ অপরাহ্ন, ২০শে আগস্ট ২০২৩


মাছের দামে আগুন, ফের দাম বেড়েছে ডিম ও বয়লার মুরগি সহ নিত্যপণ্যে
কাঁচা বাজার

বাজারে সকল প্রকার মাছের দামে আগুন, ফের দাম বেড়েছে ডিম ও বয়লার মুরগি সহ যাবতীয় নিত্যপণ্যে।


পণ্যের বাজারে করতে গিয়ে রীতিমতো চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন ক্রেতারা। যে পণ্যে কিনতে চাচ্ছেন সেটাই আগুন মনে হচ্ছে তাদের কাছে। পাঙ্গাশ ছাড়া বাজারে তিনশ টাকার নিচে কোনো মাছ নেই। গরু আর খাশির মাংসের কথা তো চিন্তাও করতে পারে না অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার। ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। চড়া সবজির বাজারও। আবার ফের দাম বেড়েছে ডিম ও বয়লার মুরগির। 


রবিরার (২০ আগস্ট) সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে কয়েকটি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের এই চিত্র দেখা গেছে।


উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ ফজলু মিয়া কাছে মাছের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাঙ্গাশ ৩০০ টাকা, রুই ৪০০টাকা, কাতল ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ৩০০ টাকা।’


গত সপ্তাহের সাথে এই সপ্তাহের দামের পার্থক্য জানতে চাইলে ফজলু মিয়া বলেন, ‘পাঙ্গাশের দাম বাড়ছে। ২৫০-৩০০ টাকা ছিল। বাকিগুলা তো আগের দামেই আছে।’


মাওনা চৌরাস্তা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ভাসমান মাছ বাজারে দেখা গেল ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। দাম অনেকেরই ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আধা কেজি ওজনের ইলিশের কেজি হাজার টাকার বেশি। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজি প্রতি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এক কেজির কাছাকাছি ওজনের ইলিশ ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।


এছাড়া এই বাজারে পোয়া মাছের কেজি ৪০০ টাকা কেজি, তুলার ডাডি ৪৫০ টাকা, চিংড়ি গুড়া ও বড় ৮০০ টাকা কেজি, সুরমা মাছের কেজি ৩২০ টাকা কেজি, ট্যাংড়া মাছ ৫০০ টাকা কেজি। মৃগেল মাছের কেজি ৩০০ টাকা। বাতাসি মাছের কেজি ৩৫০ টাকা।


ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আবার তা ২২০ টাকায় পৌঁছেছে। ডিম সাদা ৩৭০টাকা ৩০টা, লাল ৩৯০টাকা ৩০টা এক কেইস ডিম।


এ বিষয়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা কাজলের  কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আড়তে দাম বেশি। আমরা কেজিতে ১০/১৫ টাকা লাভ পাই।'


এদিকে উচ্চ দামের বোঝা বইতে গিয়ে বিপাকে ক্রেতাদের একটি অংশ৷ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ফারুক মিয়া ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভাসমান বাজারে বাজার করতে আসেন রবিবার সকালে।  আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আয়ের চাইতে ব্যয় বেশি। এমন কোনো অপশন নাই যে, আপনি কম দামে কিছু কিনতে পারবেন। প্রতি মাসেই ঋণ হচ্ছি। এভাবে চলে না।’


ক্রেতাদের হতাশার আরেকটি জায়গা সবজির বাজার। ২৫-৩০ টাকার আলু এখন ৪৫ টাকা।


সবজির দামের বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে উপজেলার জৈনা উপশহর মার্কেটের  মুদি ব্যবসায়ী কালাম মিয়া বলেন, ‘কী বিক্রি করুম আর কী কিনুম! সবার অবস্থা একই। আমার থেকে যারা কেনে, তারাও কষ্টে আছে। সব জিনিসের দাম বেশি। আমি কিছু কিনতে গেলে, সেখানেও দাম বেশি। সকালে এক কেজি বরবটি কিনতে গেছি, দেখি ৮০ টাকা। পরে আধা কেজি নিয়া আসছি। টমেটো কিনি না কতদিন মনে নাই। ১৫০ টাকা কেজি।


এখানকার বাজারে প্রতি কেজি ঢেড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, পেঁপের কেজিও ৫০ টাকা। পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, দুন্দল ৮০ টাকা, বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা। লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস, কচুর মুখী ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা।


স্থানীয়রা জানান, অতি তাড়াতাড়ি বাজার মনিটরিং করে দাম নির্ধারণ করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি। তা না হলে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মাঝে জিনিসপত্র দামে স্বস্তি ফিরে আসবে না।


আরএক্স/