গুমের দোষ চাপিয়ে বিএনপি ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে: ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৪৪ অপরাহ্ন, ৩১শে আগস্ট ২০২৩
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “গুম নিয়ে বিএনপি মিথ্যা বয়ান তৈরির মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপতৎপরতা চালাচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) এক বিবৃতিতে গুম ও অপহরণ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, “বিএনপি নেতারা গুম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে বানোয়াট বক্তব্য দিচ্ছে, তা বাস্তবতা-বিবর্জিত ও ভিত্তিহীন। বিদেশি বন্ধু ও প্রতিনিধিদের করুণা লাভের আশায় বিএনপি নেতারা ধারাবাহিকভাবে গুম-খুন নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের ফলে যেসব গুম ও খুনের ঘটনা ঘটেছে, সেটির দায় তারা সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায় সরকারের ওপর চাপানো হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা গেছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেই জামাল উদ্দিন নিজ দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা গুমের শিকার হন। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “একইভাবে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায়ভারও সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হয়। পরে দেখা যায় তিনি ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। এমনকি বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনায় বিএনপির এক সিনিয়র নেতা তার বক্তব্যে বলেছেন, ইলিয়াস আলীকে বিএনপির লোকজনই গুম করেছে, যা পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। ”
তিনি বলেন, “গুম নিয়ে বিএনপি মিথ্যা বয়ান তৈরির মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নেওয়ার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অথচ তাদের গুমের নাটকের নেপথ্যের আখ্যান আজ দেশবাসীর অজানা নয়।”
আরও পড়ুন: বিএনপি ড. ইউনূসকে নিয়ে নতুন খেলা শুরু করেছে: ওবায়দুল কাদের
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এ দেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান অসংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। জিয়াউর রহমানই এ দেশে গুমের রাজনীতির সূচনা করেন। স্বৈরাচার জিয়ার শাসনামলে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ বাবুকে রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে গুম করে হত্যা করা হয়। তার লাশটাও পরিবারের সদস্যরা খুঁজে পায়নি। চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা মৌলভী সৈয়দকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ”
তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে তথাকথিত বিদ্রোহের অভিযোগে সেনা ও বিমান বাহিনীর শত শত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সহস্রাধিক সৈনিককে হত্যা করেছিল। এমনকি সেই অফিসার ও জওয়ানদের অনেকেরই লাশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা এখনও জানেন না তাদের কোথায় দাফন করা হয়েছে। সেসব ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর শেষ চিহ্নটুকু পাওয়ার জন্য তাদের পরিবারের সদস্যরা আজও তীর্থের কাকের ন্যায় অপেক্ষা করে যাচ্ছেন।”
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রক্তের বন্যা বইয়ে দিবে: কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার সেনা অফিসার ও জওয়ানদের পরিবারের সদস্যরা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন। জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’-এর নামে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল এবং এই বেআইনি হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিতে ইনডেমনিটি আইন করা হয়।
তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সরাসরি তত্ত্বাবধানে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হাওয়া ভবনের নির্দেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে গণহত্যা সংঘটিত করে জঙ্গিগোষ্ঠী।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হত্যা-খুন-গুমের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগই বার বার হত্যা-ক্যু-খুন-গুম ও ষড়যন্ত্রের অপরাজনীতির নির্মম শিকার হয়েছে।”
জেবি/এসবি