ম মে ক হাসপাতালে চিকিৎসক-পুলিশ সংঘর্ষ, ৮ চিকিৎসকসহ আহত ১০


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২১ অপরাহ্ন, ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


ম মে ক হাসপাতালে চিকিৎসক-পুলিশ সংঘর্ষ, ৮ চিকিৎসকসহ আহত ১০
ইন্টার্ণ চিকিৎসক ও পুলিশের সংর্ঘষ। ছবি: জনবাণী

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ণ চিকিৎসক ও পুলিশের সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ও আট ইন্টার্ণ চিকিৎসক আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে পুলিশ ফাড়ি সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ।


বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।


ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


তিনি বলেন, বুধবার রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে কর্মরত এএসআই মাহমুদুল হাসান তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিনের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের পুরাতন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মাহমুদুল হাসান কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকেন। তখন ওই চিকিৎসক অন্য রোগী দেখছিলেন। তখন ওই চিকিৎসক পরে আসব বলে। কিন্তু এতে পুলিশের এএসআই মাহমুদুল হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসকের সাথে বাজে আচরণ করেন। এসময় দুই পক্ষের মাঝে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাসপাতালে কর্মরত আনসার সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে তর্কে জড়ায়। এমন খবর পেয়ে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আসেন। ওয়ার্ডে অবস্থার অবনতি দেখে ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম চিকিৎসা নিতে আসা পুলিশের এএসআই মাহমুদুল হাসানকে পুলিশের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কয়েকজন ইন্টার্ণ চিকিৎসক পুলিশ ক্যাম্পে যায়। পুলিশ ক্যাম্পে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে রুপ নেয়। পরে দুই দুই পক্ষের সংঘর্ষে আট জন ইন্টার্ণ চিকিৎসক আহত হয়। এদের মাঝে দুই জন ইন্টার্ণ চিকিৎসক ডা. শামীম রেজা ও ডা. সাদিক গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। 


এই ঘটনার পর রাতেই জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞা ও ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় পুলিশ মাসুম আহমেদ ভুঁঞা ঘটনার সাথে জড়িত হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ও এক পুলিশ সদস্য আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। 


এবিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছে। এই ঘটনা তদন্ত করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন পুলিশ সুপার। কমিটিকে তিন দিনের মাঝে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে বলা হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।


এদিকে, ঘটনার পর দিন বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিন দিনের কর্ম বিরতি ঘোষণা করেন।


ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত ১০ টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ইনটার্ন চিকিৎসকের উপর রোগীর স্বজন এবং পুলিশ ক্যাম্পের কতিপয় বিপথগামী সদস্য কর্তৃক ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত হামলা করে। এর প্রতিবাদে আগামী তিন কার্যদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। একইসাথে এই মর্মে ঘোষণা করা হল যে, উল্লিখিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উক্ত ঘটনার সুধু সমাধান প্রদানে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে কঠোর পদক্ষেপ গৃহীত হবে।


ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, হাসপাতালে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এতে হাসপাতালের ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা কর্ম বিরতি ঘোষনা করেছেন। এতে সাময়িক সমস্যা হলেও হাসপাতালের পোষ্টেট চিকিৎসক দিয়ে তা কাটিয়ে তুলার চেষ্টা করছি।


আরএক্স/