কি আছে আল-আকসায়, মুসলমানদের কাছে কেন এত গুরুত্বপর্ণ?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:৫৪ অপরাহ্ন, ৩০শে অক্টোবর ২০২৩
আল আকসা, আরবি ভাষায় এর দুটি অর্থ রয়েছে: একটি হল ‘সবচেয়ে দূর’, এখানে সবচেয়ে দূর বলতে মক্কা থেকে আল-আকসা এর দূরত্বকে বোঝায়। ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরেকটি অর্থ হল ‘সর্বোচ্চ’ পবিত্র কাবা শরীফ এর পরে সর্বোচ্চ হিসেবেও মুসলিমদের কাছে এর মর্যাদা ও গুরুত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে আল কুরআনে।
আল আকসা মসজিদটি মূলত 'মসজিদুল আকসা' বা 'বাইতুল মুকাদ্দাস' নামে পরিচিত সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কাছে।
আল-আকসা প্রাচীনতম মসজিদগুলোর একটি। মিরাজের রাতে এই মসজিদেই নামাজ আদায় করেছিলেন ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)। মক্কায় হজ্জ ও ওমরা পালনের আগে আল আকসা ছিল মুসলিমদের কাছে প্রধান ধর্মীয় স্থান।
মুসলমানরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজের রাতে কাবা শরিফ থেকে প্রথমে আল আকসা অর্থাৎ 'বাইতুল মুকাদ্দাস' এ এসেছিলেন এবং মিরাজে গমনের আগে এখানে সব নবীদের সঙ্গে নামাজের সময় ইমাম হিসেবে নামাজ আদায় করেন।
এই প্রাঙ্গণের যেমন ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে এর পাশাপাশি ফিলিস্তিনি জনগণের সংস্কৃতি ও জাতীয়তার প্রতীকও এটি।
সোনালী গম্বুজের ‘ডোম অফ দ্য রক’ সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে স্বীকৃত এবং এই স্থানে প্রার্থনা করতে আসতে পারা একটি বড় সুযোগ বলে মনে করেন মুসলিমরা।
বর্তমান সীমানা প্রাচীর গুলো তৈরি হবার আগের বছরগুলোতে, মুসল্লিরা পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার উদ্দেশ্যে হজ্জের জন্য যাত্রা করলেও সেই সফরে জেরুসালেমকেও অন্তর্ভুক্ত করতেন।
আল-আকসার বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ এখনও হাজার হাজার ধর্মানুরাগীকে আকৃষ্ট করে, যারা প্রতি শুক্রবার জামাতে নামাজের জন্য জড়ো হন এই পবিত্র ভূমিতে।
মূলত এসব কারণেই মুসলমানদের কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ন এই মসজিদুল আকসা বা আল আকসা।
আর ইহুদিদের মতে, আল আকসায় ‘ফাউন্ডেশন স্টোন’ বা বিশ্বের ‘ভিত্তি পাথর’ এর অবস্থান। যেখান থেকে বিশ্বের সৃষ্টি শুরু হয়েছিল বলে তারা বিশ্বাস করে।
অন্যদিকে খ্রিস্টানরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এটাই সেই জায়গা যেখানে যীশু খ্রিস্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন আর এখানকার গুহাতেই তার দেহ রাখা হয়েছিল।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে জেরুজালেম ও পশ্চিমতীর দখল করে নেবার আগে এটি নিয়ন্ত্রণ করতো জর্ডান। এখন পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েল অধিকৃত হলেও আল-আকসা বা টেম্পল মাউন্ট এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা করে জর্ডান-ফিলিষিÍনের একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান।
আল আকসা প্রাঙ্গণটি মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টান- তিন ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র স্থান। তাই যুগ যুগ ধরে এই এলাকা ঘিরেই চলছে বিবাদ। বলা যায় ঐতিহাসিকভাবে এটিই বিবাদের মূল ইস্যু।
জেবি/আর