নামাজের সময় বাইরে থেকে তালা দিয়ে মসজিদে আগুন, নিহত ১১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, ১৭ই মে ২০২৪
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় মসজিদে আগুনে পুড়ে ১১ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেক মুসল্লি। দেশটির কানো প্রদেশের একটি মসজিদে নামাজের সময় বাইরে থেকে তালা আটকে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ঘটনার সময় এসব মুসল্লিরা ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যায়। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কানো প্রদেশের একটি মসজিদে এক ব্যক্তির হামলায় অন্তত ১১ জন মুসল্লি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে। তারা বলেছে, এক ব্যক্তি মসজিদে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগানোর আগে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং এতে মসজিদের ভেতরে প্রায় ৪০ জন মুসল্লি আটকা পড়েন।
আরও পড়ুন: দুবাইয়ে ৩৯৪ বাংলাদেশির সম্পদের পাহাড়, মূল্য ২ হাজার ৬৩৬ কোটি
বিবিসি বলছে, উত্তরাধিকার তথা সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। পুলিশ বলছে, তারা এই ঘটনায় ৩৮ বছর বয়সী সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করেছে। কানো প্রদেশের গেজাওয়া এলাকায় মুসল্লিরা ফজরের নামাজে অংশ নেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
বাসিন্দারা বলেছেন, হামলার পর মসজিদের ভিতরে আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় মুসল্লিদের আর্তনাদের আওয়াজ শোনা যায় এবং তারা ভেতর থেকেই তালাবদ্ধ দরজা খুলতে চেষ্টা করেন। অবশ্য বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর প্রতিবেশীরা ভেতরে আটকে পড়াদের সাহায্য করতে ছুটে আসেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কানো শহরে বোমা বিশেষজ্ঞসহ উদ্ধারকারী দলগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদে হামলায় কোনো বোমা সাদৃশ্য ব্যবহার করা হয়নি বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনে মিলল ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কানো শহরের ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লাগার পরপরই তাদের ডাকা হয়নি, আরও আগে জানানো হলে তারা আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারতেন। কানো ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র সামিনু ইউসুফ বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয়রা আগুন নেভানোর পরেই তাদেরকে জানানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে, মানুষের আমাদের কল করার কথা ছিল কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা লোকেশন থেকে কোনও ফোনকল পাইনি।’
পুলিশ বলেছে, সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে বিরোধের অংশ হিসেবে এই ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করেছে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি। তার দাবি, সে মসজিদের ভেতরে থাকা পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে লক্ষ্য করে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর স্থানীয় পুলিশ প্রধান উমর সান্দা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘যা ঘটেছে তা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, বরং এটি সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জেরে হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তি বর্তমানে আমাদের কাছে আছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিচ্ছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুসহ আরও অনেকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে পুরো এলাকায় এখন শোকের মাতম চলছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
এমএল/