আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনে মিলল ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, ১৬ই মে ২০২৪


আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনে মিলল ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মা জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনায় টিকায় বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। 


গবেষকরা বৃহস্পতিবার (১৬ মে) জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তৈরি করা অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনটির কারণে ‘ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রোমবোকায়টোপেনিয়া অ্যান্ড থ্রোমবোসিসের’ (ভিআইটিটি) ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।


‘ভিআইটিটি’ রক্ত জমাট বাধার একটি অতি বিরল রোগ, তবে এটা খুবই মারাত্মক রোগ।


আরও পড়ুন: ৪৬৮ হজযাত্রী বহনকারী বিমানে আগুন, জরুরি অবতরণ


ভিআইটিটি নামের এই রোগটি পৃথিবীতে নতুন না হলেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পুশের পর নতুন করে এটির দেখা দিয়েছে। ২০২১ সালে করোনার সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাবের সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনটি এশিয়ার দেশগুলোতে কোভিশিল্ড এবং ইউরোপে ভ্যাক্সজেভরিয়া নামে অনেক বিক্রি হয়েছে।


গবেষকরা বলেছেন, “একটি অস্বাভাবিক বিপজ্জনক রক্ত অটোঅ্যান্টিবডি প্লাটিলেট ফেক্টর ৪ নামের একটি প্রোটিনের বিরুদ্ধে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল। আর যেটি ভিআইটিটির কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে।”


সম্প্রতি ব্রিটেনের আদালতে ১০ কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণের মামলা হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোম্পানির বিরুদ্ধে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই মামলার কার্যক্রম চলার মধ্যেই বাজার থেকে নিজেদের কোভিড-১৯ টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।


আরও পড়ুন: দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে পৌঁছেছেন পুতিন


গত ফেব্রুয়ারিতে এক নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছিল যে, টিকা গ্রহণের পর টিটিএস বা থ্রম্বসিস উইথ থ্রম্বোসিটোপেনিয়া সিনড্রোম নামের এক প্রকার শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে, তবে তা খুবই বিরল প্রজাতির রোগ।


টিটিএস হলো এমন একটি শারীরিক জটিলতা, যার কারণে শরীরের নানা অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং প্ল্যাটিলেট কমে যায়। যুক্তরাজ্যে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হয়ে ২০২০ সালের টিকাদান কর্মসূচির শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৮১ জনের মৃত্যু ঘটেছে।


বাজার থেকে কোভিড-১৯ টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘নিরপেক্ষ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছাড়পত্র পাওয়ার পর এক বছরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩০০ কোটি করোনা টিকার ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বজুড়ে। আর এসব টিকার ডোজ বিশ্বের ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার আমাদের প্রচেষ্টার ভূঁয়শী প্রশংসা করেছে এবং করোনা মহামারি দূর করতে যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সেটা বৈশ্বিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।


আরও পড়ুন: ইউরোপে প্রতিদিন হৃদরোগে মৃত্যু হয় ১০ হাজার মানুষের


‘কিন্তু এখন মূল করোনা ভাইরাসটি প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় এবং এটি থেকে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টগুলোও দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এসব টিকা এখন অতিরিক্ত বলে বিবেচিত। তাই সব ভ্যাকসিন বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। ইতোমধ্যেই অংশীদারদের এ ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।’


এমএল/