স্নায়ুবিক সমস্যা মৃগী সচেতন মাস উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৩ অপরাহ্ন, ৮ই নভেম্বর ২০২৩


স্নায়ুবিক সমস্যা মৃগী সচেতন মাস উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনার
মৃগী সচেতন মাস উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনার।

শুরুতেই নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু হলে দীর্ঘমেয়াদী অক্ষমতা প্রতিরোধ করা সম্ভব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মৃগী সচেতন মাস উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 


বুধবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ই ব্লক অডেটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করে  ইনিস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো ডিসঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।


সেমিনারে শিশু নিউরোলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কাজী আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক ডা. সানজীদা আহমেদ  একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারের শুরুতেই বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার  আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ ড. সায়মা ওয়াজেদকে অভিনন্দন জানানো হয়।


উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা বিশ্বে ৫০ মিলিয়ন মানুষ মৃগী রোগে আক্রান্ত। এই রোগ যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে। যদি কোন শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয় সমাজ তাকে অস্পৃশ্যভাবে । এটা কিন্ত ঠিক নয়।  এ রোগ চিকিৎসায় ভাল হয়। 


এ রোগ যদি শুরুতে ধরা যায় ও চিকিৎসা দেয়া যায় তাহলে সম্পূর্ণ সুস্থ করা যায়। এ রোগের সব ধরণের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু নিউরোলোজি বিভাগ ও ইপনায় হয়ে থাকে।


অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্ন্তজাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের যত অর্জন সব কিছুই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী দ্বারাই অর্জিত হয়েছে।  সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কন্যা আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ ড. সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাই। তার অনুমতি সাপেক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সংবর্ধনা দিতে চায়।


সেমিনারে বলা হয়,  মৃগী রোগ বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে সাধারণ স্নায়ুবিক রোগ। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষের মৃগীরোগ রয়েছে। মৃগীরোগে আক্রান্ত প্রায় ৮০ শতাংশ লোক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করে। এটি অনুমান করা হয় যে মৃগীরোগে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ খিঁচুনি মুক্ত থাকতে পারে যদি সঠিকভাবে নির্ণয় করা হয় এবং চিকিৎসা করা হয়। জীবনের প্রথম ১০ বছরে প্রায় ১৫০ শিশুর মধ্যে ১ জনের মৃগী রোগ ধরা পড়ে। 


বাংলাদেশে মৃগী রোগের প্রকোপ প্রতি ১০০০ জনে ৮ দশমিক ৪ জন। শিশুদের মধ্যে মৃগীরোগ বেশি দেখা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের মৃগীরোগ সিনড্রোম পাওয়া যায়। প্রতিটি ধরনের চিকিৎসা এবং আরোগ্য সম্ভাবনা নির্দিষ্ট ধরনের আছে। কিছু মৃগীরোগ ওষুধের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য। 


কিছু মারাত্মক ধরণের মৃগী রোগ আছে যা ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন এবং মস্তিষ্কের বিকাশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। খিঁচুনির ওষুধ ছাড়াও কিছু বিকল্প চিকিৎসা বিদ্যমান রয়েছে। বিকল্পগুলি হল কিটোজেনিক ডায়েট, ইমিউনোথেরাপি, নিউরোস্টিমুলেশন, এপিলেপসি সার্জারি। মৃগী রোগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। শিশুদের মৃগী রোগ শুরুতেই নির্ণয় করা সম্ভব হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা শুরু করা হলে দীর্ঘমেয়াদী অক্ষমতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন ) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ,  মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার, শিশু নিউরোলোজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান।


সেমিনারে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু নিউরোলোজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডু, শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ডা.  কানিজ ফাতেমা।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইপনার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন  ইপনার ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর ডা.  মাজহারুল মান্নান।


আরএক্স/