জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি: জ্ঞান ও শৃঙ্খলা মূলমন্ত্র


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ৯ই ডিসেম্বর ২০২৩


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি: জ্ঞান ও শৃঙ্খলা মূলমন্ত্র
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি। ছবি: জনবাণী

সজীবুর রহমান: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিএনসিসি প্লাটুন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের রমনা রেজিমেন্টের চার্লি কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত। জ্ঞান ও শৃঙ্খলা’ এ সংগঠনের মূলমন্ত্র। জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাবি প্লাটুন বিএনসিসি কন্টিনজেন্ট এর পদোন্নতি র‍্যাংক ভাইভা, চড়াই ভাতি, আন্তঃব্যাচ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।


শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর ) বেলা তিনটায় র‍্যাঙ্ক ভাইভা কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে জাবি বিএনসিসি প্লাটুনের প্রফেসর আন্ডার অফিসার (পিইউও) সহযোগী অধ্যাপক মো. রাকিবুল হাসান ও ক্যাডেট সার্জেন্ট ইনচার্জ শফিউজ্জামান শাহিন (ভূত্বত্ত বিজ্ঞান-৪৯) এর তত্ত্বাবধানে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় এবং সমস্ত প্রোগ্রামের ইনভেনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্যাডেট করপোরাল শাহাদাত হোসেন।


আরও পড়ুন: দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন


জাবি বিএনসিসি প্লাটুন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের রমনা রেজিমেন্টের চার্লি কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত। ক্যাডেট সার্জেন্ট ইনচার্জ শফিউজ্জামান শাহিন এ প্লাটুনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া ক্যাডেট সার্জেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ক্যাডেট সার্জেন্ট আখি কাজল , ক্যাডেট সার্জেন্ট এস এম  নিশাত জাহান ও ক্যাডেট সার্জেন্ট সাজ্জাদ হোসেন।


পদোন্নতি অনুষ্ঠানে ক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরাল থেকে ক্যাডেট কর্পোরাল নয়জন এবং  ক্যাডেট থেকে ক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরাল পদে নয়জন সর্বমোট আঠারো জন ক্যাডেটকে পদোন্নতি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরলস ভাবে কাজ করছেন বিএনসিসি ক্যাডেটরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডেটদের মধ্য থেকে  অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে প্রতি বছর পদোন্নতিপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের র‍্যাঙ্ক ব্যাজ দেয়া হয়। 


এছাড়াও জাবি বিএনসিসি বার্ষিক পদোন্নতি (র‍্যাংক) ভাইভা পর্ব শেষে, বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসির  উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির পালন করা হয়েছে। বিএনসিসি প্লাটুনের (পিইউও) সহযোগী অধ্যাপক মো. রাকিবুল হাসান বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এসময় ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা হয়৷


বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির পরেই জাবির কেন্দ্রীয় মাঠে শুরু হয় আন্তঃপ্লাটুন ড্রিল, বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উক্ত অধিবেশনে  প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় সহ মোট  ১০ জন বিজয়ীকে পুরস্কার উপহার দেওয়া হয়।


পুরস্কার বিতরণী পর্ব শেষে, ক্যাডেটরা মেতে উঠে চড়ুইভাতি পর্বে। চড়ুইভাতিই আয়োজন করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যে ধরে রাখল বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) জাবি প্লাটুন ক্যাডেটরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছায়া মঞ্চে এই চড়ুই ভাতি অনুষ্ঠিত হয়। 


প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন সম্পর্কে জাবি বিএনসিসি প্লাটুন (পিইউও) অধ্যাপক মো. রাকিবুল হাসান বলেন, "আমি তো সবসময়ই এরকম একটি প্রোগ্রাম করতে চাই। এটি একটি পরিবার তো পরিবার নিয়ে আমি সবসময় আনন্দ থাকতে চাই। এইজন্য সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমি সবসময় কামনা করি। আমি এগুলো ব্যাপারে খুবই ইনজয় করি এবং ভবিষ্যতে আমি এগুলো চলমান রাখবো। আর প্রোগ্রামের সাথে যেটা ছিল বৃক্ষরোপণ এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ। আমরা হয়তো পরবর্তী সময় থেকে এটা চলমান রাখবো। আজকের প্রোগ্রামে থাকতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে। ক্যাডেটদের মানসিক শারীরিকভাবে উন্নয়নের পক্ষে তিনি বলেন, আমি সবসময় তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু তারা কেন জানি সবকিছু বলে না, আমি চাই ক্যাডেটরা সব সময় আমার সাথে যোগাযোগ রাখবে ক্লাসে নিয়মিত আসবে এটাই প্রত্যাশা রাখি।"


আরও পড়ুন: জাবিতে ছাত্রদলের মশাল মিছিল


অনুষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পর্কে জাবি প্লাটুনের ক্যাডেট-ইনচার্জ শফিউজ্জামান শাহিন বলেন, "জাবি বিএনসিসি ক্যাডেটরা লেখাপড়ার সাথে সাথে নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন ও নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জনের লক্ষে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব নিয়ে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাবে । তার সাথে বিএনসিসির প্রতিটি ক্যাডেট সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ভূমিকা পালন করবে। বিএনসিসি একমাত্র সংগঠন যেখানে আমি শিখেছি মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি দায়ীত্ব পালনের, শিখেছি সৎ, সত্যবাদিতা, কর্মঠ হওয়ার, পাহাড় সমান ধৈর্য্য ধারনের কিংবা শৃংখলা আর মানুষে মানুষ সবাই সমান হয়ে একতাবদ্ধভাবে জীবন যাপনকরার শক্ত ট্রেনিং।পরবর্তীতে ক্ষমতার পালাবদলের পরেও ক্যাডেটরা এই অব্যাহতি বজায় রাখবেন।"


অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সার্জেন্ট আল মাহদি হাসান (বিএসএম), সার্জেন্ট মেহেদী হাসান, প্রাক্তন ক্যাডেট কর্পোরাল হারুনর রশীদ রাফি,  প্রাক্তন ক্যাডেট সার্জেন্ট ইনচার্জ হাসিব সোহেল (সিইউও), প্রাক্তন ক্যাডেট সার্জেন্ট ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম (সিইউও), প্রাক্তন ক্যাডেট কো-ইনচার্জ মুইদ মোহাম্মদ ফাহিম।


এছাড়াও এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্লাটুন কমান্ডার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ, কো-ইনচার্জ  ও বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসির ক্যাডেটবৃন্দ।


আরএক্স/