গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরন হ্রাস অন্যতম চ্যালেঞ্জ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, ৯ই ডিসেম্বর ২০২৩


গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরন হ্রাস অন্যতম চ্যালেঞ্জ
ছবি: জনবাণী

বশির হোসেন খান, আরব আমিরাত (দুবাই) থেকে: বিশ্বের তাপমাত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরন হ্রাস অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে মোট কার্বন নি:সরনের ৭ শতাংশ হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রেণর যন্ত্র থেকে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ জনিত কারেণ কার্বন নি:সরন দ্বিগুন হবে। একই সাথে সেই সময়ে যে মোট কার্বন নির্গমন হবে, তার ১০ শতাংশ আসবে কুলিং ইকুইপমেন্ট থেকে।


শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন-কপ-২৮ এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনই এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে এই খাত থেকে ২০৫০ সাল নাগাদ ৩.৮ বিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি কমানো সম্ভব হবে। গতকাল পর্যন্ত গ্লাোবাল কুলিং অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬০ দেশ।


আরও পড়ুন: কার্বন নির্গমন কমাতে বিশ্বকে সতর্ক করলো পরিবেশ বিজ্ঞানীরা


এ বিষয়ে কপ-২৮ প্রেসিডেন্ট ড. সুলতান আল জাবের বলেন, আমাদের জ্বালানি সক্ষমতা বাড়াতে হলে আমাদের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং শীতলীকরণ থেকে নিঃসরণ কমাতে হবে। একই সঙ্গে টেকশই শীতলায়নে প্রবেশাধিকার বাড়াতে হবে সাধারণ মানুষের। এটা দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বেশি প্রযোজ্য, কারণ তারা কম কার্বন নিঃসরণ করে আর বেশি ক্ষেতিগ্রস্থ হয়।

  

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমান প্রবৃদ্ধির প্রবণতা অনুযায়ী, কুলিং ইকুইপমেন্টের মাধ্যমে মোট বিদ্যুত খরচের ২০ শতাংশ খরচ হয়। ২০৫০ সালে তা দ্বিগুন হবে। পাশাপাশি রেফ্রিজারেন্ট গ্যাসের লিকেজের পাশাপাশি বিদ্যুৎ খরচ থেকে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন বৃদ্ধি পাবে।  প্রতিবেদন অনুযায়ী, এতে ভোক্তাদের এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। এ ক্ষেত্রে জ্বালানী খাত সংশ্লিষ্টদেরও ব্যয় কমবে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এছাড়া ৩৫০ কোটি মানুষ জীবন বাঁচাতে শীতাতপ সুবিধার আওতায় আসতে পারবে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬০ দেশ কুলিং কার্বন কমানোর অঙ্গীকার করে এ সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।


প্রতিবেদনে পৃথিবীর উন্নত ২০টি দেশকে (জি২০) ৭৩ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমাতে বলা হয়েছে।

  

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইনগার এন্ডারসেন বলেন, প্রতিবেদনের যে সুপারিশ গুলো রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলে পিক আওয়ারে চাহিদা দেড় থেকে দুই টেরাওয়াট কমবে। যা পুরো ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর চাহিদার প্রায় দ্বিগুন। 

 

জলবায়ুর প্রভাবে অবনতি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্য আজ দুবাইয়ের এক্সপো সিটিতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আয়োজিত একটি সাইড ইভেন্টে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে নানা ধরনের দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সংক্রমক রোগের প্রদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া ও মানসিক স্বাস্থ্যের অভনতি অন্যতম। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি। 


স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ মিশনের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ড. ওয়ামেক রাজা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ,  বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ এবং প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের ক্লাইমেট অ্যান্ড হেলথ লীড তামের রাবি।


আরও পড়ুন: জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বন্ধে উপায় খুঁজছে বিশ্ব


অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে ডেংগু পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৫৯ হাজার থেকে ৩ লাখ ২৩ হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে।


এই অনুষ্ঠানে স্বাস্থমন্ত্রী  জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা ধরনের রোগ বেড়ে যাওয়ার কথা বর্ণনা দেন। তিনি  এ সমস্যা দূরীকরণ করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা তুলে ধরেন।  এক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।  তিনি উন্নয়ন সহযোগীদের জলবায়ু বান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মানে কার্যকরী পদক্ষেপ তথা কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা করার আহবান জানান।


আরএক্স/