৪০ বছর ধরে অপ্রতিরোধ্য চেয়ারম্যান “মন্টু” হতে চান এমপি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৩৭ অপরাহ্ন, ১৩ই ডিসেম্বর ২০২৩


৪০ বছর ধরে অপ্রতিরোধ্য চেয়ারম্যান “মন্টু” হতে চান এমপি
মীর এনায়েত হোসেন মন্টু। ফাইল ছবি

৪০ বছর ধরে অপ্রতিরোধ্য একজন সফল জনপ্রতিনিধির নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু। তিনি বেশিরভাগ মানুষের কাছে "মন্টু চেয়ারম্যান" হিসেবে বেশ পরিচিত থাকলেও তার ডাক নাম "মন্টু"। মন্টু এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই নাজির পাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত মীর ছাদত হোসেনের ছেলে।


বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বিপুল ভোটে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন, গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন টানা পাঁচ বার, ১৯৭৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন, ২০২১-২২ সালে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও ছিলেন তিনি, ১৯৬৮-৬৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন,১৯৭০ সালে জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন,বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন,বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেম্বার কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।


আরও পড়ুন: জাপার চেয়ারম্যান হলেন রওশন এরশাদ


১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও গ্রাম বাংলায় প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তৎকালীন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিবাদ প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তী ভারতেও অবস্থান করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী পরপর পাঁচ বার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সাল পর্যন্ত টানা দায়িত্ব পালন করেন এবং বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হন।


১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া চেয়ারম্যানদের সম্মেলন ডাকেন, উক্ত সম্মেলনে চেয়ারম্যানদের দাবি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার কারনে চেয়ারম্যানদের সাথে নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সমিতি গঠন করেন এবং আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।পরবর্তী তিন মাস পর জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ চেয়ারম্যান সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন।


২০০৯ সালে ইউপি চেয়ারম্যান হতে অব্যাহতি নিয়ে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে আরো দুই বারসহ মোট তিন বার টানা নির্বাচিত হন।


তিনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে মসজিদ,মন্দির,স্কুল কলেজ,মাদ্রাসা,এতিমখানা ও কবরস্থান প্রতিষ্ঠায় সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন। তিনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে রাস্তা ঘাট,ব্রিজ কালভার্ট নির্মান ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: গণতন্ত্রী পার্টির সব প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল


পারিবারিকভাবে মন্টুর বড় ভাই মীর দৌলত হোসেন বিদ্যুৎ উপজেলা আওয়ামী লীগে ১০ বছর সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন করছেন।


ছোটভাই মীর শরীফ মাহমুদ মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্র সংসদের (বর্তমান নাম শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজ) সাবেক ভিপি,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক,উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।


তার ছেলে মীর মঈন হোসেন রাজীব টাঙ্গাইল জেলা যুবলীগের সাবেকসহ সম্পাদক, তারার মেলা বিশেষ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব মির্জাপুর উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।


সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর সংসদীয় আসনে এমপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন।


বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু দৈনিক জনবানীকে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু স্বতন্ত্র,ডামি,বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তাই আমি জনগনের সমর্থন নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছি এবং এমপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।


উল্লেখ্য, তফসিল অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই সম্পন্ন হয়েছে  ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।


আরএক্স/