আওয়ামী লীগ সরকার আছে মানেই উন্নয়ন আছে: প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:১০ অপরাহ্ন, ২০শে ডিসেম্বর ২০২৩


আওয়ামী লীগ সরকার আছে মানেই উন্নয়ন আছে: প্রধানমন্ত্রী
বুধবার বিকেলে সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

আগুন সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হবে উল্লেখ করে  প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষ পোড়ানোর মতো এত সাহস তারা কোথা থেকে পায়। মনে রাখতে হবে, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে সেই আগুনেই হাত পোড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার আছে মানেই উন্নয়ন আছে। আমার হারাবার কিছু নেই। সব হারিয়ে নিজের সন্তানদের দূরে সরিয়ে দেশে এসেছিলাম, এই দেশের মানুষের জন্য। যারা লুটেরা খুনি তারাই মানুষ পোড়ায়।’


বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলিয়া মাদরাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  এর আগে সভামঞ্চে ৩টা ১০ মিনিটে মঞ্চে পৌঁছেন তিনি।


শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্য আপনাদের কাছে হাজির হয়েছি। ১৯৮১ সালে সিলেট থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করি। আজকে আবারও এসেছি। ১৯৫৯ সালে ছোট ছিলাম তখনও এসেছি। তবে ’৮১ সালে আসাটা ছিল ভিন্ন। তখন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে এসেছিলাম।  তখন এসেছিলাম একটি প্রত্যয় নিয়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তববায়নের স্বপ্ন নিয়ে। আমার বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। এমন দেশে ফিরেছিলাম। আমি দেখেছি কীভাবে ভোট চুরি করে, কীভাবে গণতন্ত্র হরণ করে। ২১ বছর পর সরকার গঠন করে স্বপ্ন দেখেছি দেশকে সুন্দরভাবে গঠন করার।”


প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশ আমার পরিবার। সেই পরিবার নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষ বারবার নৌকায় ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য আজকের বিশ্বে আমরা মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস। ২০১১ সালে আমেরিকা আমাদের এই সম্পদ গ্যাস ক্রয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল আমাকে। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি।  আমি বলেছি, আমার দেশের জনগণের কল্যাণে এগুলো ব্যবহার করবো। ৫০ বছরের গ্যাস মজুত রেখে অবশিষ্ট থাকলে বিক্রি করবো। কিন্তু জনগণকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করেছিল সেই বিএনপি আমেরিকাকে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে আবার ক্ষমতায় যেতে চায়। যে কূপে বিএনপি গ্যাস পায়নি, সেই কূপ খনন করে আওয়ামী লীগ গ্যাস আর গ্যাস পেয়েছে।”


“আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালে যেসব স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্যাস পায়নি, আওয়ামী লীগের আমলে সেসব স্থানেই গ্যাসের সঙ্গে তেলও পাওয়া গেছে। বিএনপির আমলে মিললে এসব তারা লুটেপুটে খেতো, কিন্তু এসব সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি।”


বিএনপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাণিজ্য করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি হেরেছে দলের মনোনয়নপত্র বাণিজ্যের কারণে। লন্ডনে বসে দলের মনোনয়নপত্র দেওয়া হয় একজনকে, গুলশান থেকে আরেকজনকে আর পল্টন থেকে দেওয়া হয় আরেকজনকে। যার জন্য তাদের এত ভরাডুবি।



আরও পড়ুন: আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন: শেখ হাসিনা


“তাদের মনুষ্যত্ব বোধ থাকলে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতো না। ২০১৩ সালে আগুন দেওয়া শুরু করে। ১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মানুষ পোড়ায়। অগ্নিসন্ত্রাস করে তারা নির্বাচন বানচাল করতে পারেনি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মনোয়ন বাণিজ্য করে নির্বাচন শেষ করে দেয়। আজকে দেশে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বিএনপির আমলে এটি ছিল না। দারিদ্র্য হার ৪১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮তে নামিয়েছি। ৮ লাখ ৪১ হাজার মানুষকে ঘর দিয়েছি। ২১ জেলা গৃহহীনমুক্ত করেছি, তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। কোনও মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেই লক্ষ্য রেখে কাজ করি।”


তিনি আরও বলেন, “মোবাইল ফোন কারও হাতে ছিল না। ৯৬ সালে আমরা তা নিয়ে এসেছি, সহজলভ্য করেছি। আজকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ। ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে মানুষ। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সিলেট আমাদের সঙ্গে আছে।”


আরও পড়ুন: সিলেটে জনসভার মঞ্চে শেখ হাসিনা


এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এরপর তিনি হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে সার্কিট হাউজে মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম নেন।


জেবি/এসবি