ঢাকার ১২ শতাংশ বাড়ি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:০৪ অপরাহ্ন, ২রা জানুয়ারী ২০২৪


ঢাকার ১২ শতাংশ বাড়ি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে
ফাইল ছবি

বিদায়ী বছরে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। শীতের সময় সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও এবার ডিসেম্বর শেষেও সেরকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ডেঙ্গুতে এখনও সারাদেশে প্রতিদিন শখানেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।


ঢাকার দুই সিটিতে বর্ষা-পরবর্তী এডিস মশার লার্ভা বা শূককীট জরিপের তথ্যে উঠে এসেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১২ দশমিক ৩ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।


আরও পড়ুন: একদিনে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডে বর্ষা-পরবর্তী লার্ভা জরিপ করে। যেখানে উত্তর সিটির ৪০টি ও দক্ষিণের ৫৯টি ওয়ার্ডে মোট তিন হাজার ২৮৩টি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি।


রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ২০২২ সালের বর্ষা-পরবর্তী জরিপে উত্তরে শতকরা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ ও দক্ষিণ সিটি এলাকায় ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। সে হিসাবে ২০২২ সালের বর্ষা-পরবর্তী সময়ের চেয়ে ২০২৩ সালে তা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।


এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বা উপস্থিতি হিসাব করা হয় ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ বা বিআই সূচকের মাধ্যমে। বিআই প্রতি ১০০ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। আর হাউজ ইনডেক্স যদি প্রতি ১০০ প্রজনন উৎসের ১০টি হয় তাহলে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা হয়।


স্বাস্থ্য অধিপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ী বছর বর্ষা-পরবর্তী জরিপে উত্তর সিটির ১৩ দশমিক ৪ ও দক্ষিণের ১৪ দশমিক ৬ বিআই পাওয়া গেছে। উত্তরে সবোর্চ্চ বিআই ছিল ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও দক্ষিণে ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ।


আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে একদিনে আরও দুইজনের মৃত্যু


তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের ৫৮ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছর। এর বয়সে মারা গেছে মোট ৪১ শতাংশ। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন কর্মজীবী।


২০২২ সালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ নারী ও ৬০ শতাংশ পুরুষ ছিল। আর মৃতদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ নারী, ৪৩ শতাংশ পুরুষ।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বিদায়ী বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ ঢাকায় এবং ৬৬ শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা হাসপাতালে। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ ও বরিশাল জেলায়।


বিদায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, মার্চে কোন মৃত্যু হয়নি, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ২ জন, জুনে ৩৪ জন, জুলাইয়ে ২০৪ জন, অগাস্টে ৩৪২ জন, সেপ্টেম্বরে ৩৯৬ জন, অক্টোবরে ৩৫৯ জন, নভেম্বরের ২৭৪ জন ও ডিসেম্বরে মারা যায় ৮৩ জন।


এছাড়া বিদায়ী বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ জন, জুলাইয়ে ৪৩ হাজার ৮৭৬ জন, অগাস্টে ৭১ হাজার ৯৭৬ জন, সেপ্টেম্বরে ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন, অক্টোবরে ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন, নভেম্বরে ৪০ হাজার ৭১৬ জন ও ডিসেম্বরের ৯ হাজার ২৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।


জেবি/এজে