মুরুব্বিদের পরামর্শে চললে বাংলাদেশের আর চলা লাগবে না: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৮ অপরাহ্ন, ৯ই জানুয়ারী ২০২৪
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘মুরুব্বিদের পরামর্শে চললে বাংলাদেশের আর চলা লাগবে না। এটাই হলো বাস্তবতা। যদি সৎ পরামর্শ হয়, সেটা ভালো কথা।’
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে গণভবনে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ~বিএনপির লক্ষ্য ছিল এবার নির্বাচন হতেই দেবে না। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে তারাও সেই পরামর্শ দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি করে, যাতে নির্বাচন না হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে তারা চিনে নাই। ’৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৭৫-এর পর থেকে যত নির্বাচন আমরা দেখেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল এবং অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
এরপর তিনি যোগ করেন, “৭৫-এর পর নির্বাচন মানে কি আমি দেখেছি, নির্বাচন নামেই নির্বাচন। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ভোটার লিস্টে মিথ্যা নাম দেওয়া, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের পকেট থেকে রাজনৈতিক দল বের হতো, এই দল মাটি মানুষের কথা বলে না। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে গঠিত রাজনৈতিক দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে মানুষের অধিকারের কথা বলার জন্য, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না তখনই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। সৃষ্টির শুরু থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে কাজ করে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বারবার অনেকেই এসেছে, আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছে, ইয়াহিয়া খানও চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ চেষ্টা করেছে। জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, কীভাবে খালেদা জিয়াও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্মমতা করেছে।”
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার শপথ
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, এ দেশের প্রতিটি শ্রেণির মানুষ আজ তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। একটা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকলে কোনোদিন এভাবে পুড়িয়ে মারতে পারে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ভেবেছিল একেবারে ক্ষমতায় চলে যাবে, কিন্তু ওই নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পায় তারা। এরপর থেকে তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানুষ হত্যা এগুলো পছন্দ করে না। তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। যে কারণে তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায়নি।”
দেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “মুষ্টিমেয় খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের দল ছাড়া এ দেশে সব মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। এত দলের মধ্যে দুই-চারটা দল অংশগ্রহণ না করলে কিছু আসে যায় না। জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। ১২০ বছরের বয়স্ক বুড়ো মানুষও ভোট দিতে গেছে। এরচেয়ে বড় কথা আর কি হতে পারে?”
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাল ভুটান
নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “অত্যন্ত কঠোরভাবে শৃঙ্খলা রক্ষা করে তারা নির্বাচন করেছেন। সুশৃঙ্খল নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। এ ধরনের চমৎকার নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, আমি জানি তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশায় ভুগছেন। তাদের বলব, হতাশার কিছু নেই, আপনার তো এই দেশেরই জনগণ।”
জেবি/এসবি