জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ বাতিলের দাবিতে জাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:১৬ অপরাহ্ন, ১৭ই জানুয়ারী ২০২৪


জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ বাতিলের দাবিতে জাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ
ছবি: জনবাণী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ বাতিলের দাবিতে সারাদেশব্যাপী পাঁচ লক্ষ স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযানের অংশ হিসেবে জাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে।


বুধবার (১৭ জানুয়ারি)  সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ জেনিচের সঞ্চালনায় সাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন।


আরও পড়ুন:  স্মৃতির পাতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের শিক্ষাসফর


অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন,  জ্ঞান-বিজ্ঞান-মনুষ্যত্ব ধ্বংসকারী এ শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ গড়ে উঠে, চরিত্র গড়ে ওঠে, দক্ষতা সম্পন্ন মানুষ তৈরি হয়। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এক নয়। এই শিক্ষাক্রম শুধু দক্ষতাসম্পন্ন অনুগত শ্রমিক তৈরি করবে, কিন্তু জ্ঞান অর্জনের পথ রুদ্ধ হবে। এতে মানুষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন পশুতে পরিণত হবে৷ একদিকে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলোকে সংকোচিত করা হচ্ছে। ফ্যাসীবাদী শাসন ব্যবস্থার পরিপূরক মনন তৈরির জন্যেই এ শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে।


দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও কোনো ব্যবস্থার এতো আমূল পরিবর্তন করা হয়নি। যেকোনো পরিবর্তন একটা ধারাবাহিকতার মাধ্যমে করা হয়। কিন্তু এখানে একদম নতুন একটা মডেল এনে দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ আবার এই কারিকুলামের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছেন তাদের ওপর হামলাও করা হচ্ছে৷ সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও এ কারিকুলাম নিয়ে কোনো সেমিনার করতে হলে উপাচার্যের অনুমোদন নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে এসে কেন শিক্ষক বা বিভাগকে সেমিনার করতে হলে উপাচার্যের অনুমতি নিতে হবে? অর্থাৎ আমরা দেখছি একটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ও কাজ করছে৷ আমরা অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ফ্যাসিজমের জায়গা নয়।’ 


আরও পড়ুন: জাবিতে অবিলম্বে ৫২তম ব্যাচের সশরীরে ক্লাস চালু করার দাবি


উক্ত অনুষ্ঠানে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাফিউজ্জামান ফরিদ বলেন, ‘আমরা চাই জ্ঞানবিজ্ঞান ও মনুষ্যত্ব ধ্বংসকারী এমন শিক্ষাক্রম বাতিল হোক। শিক্ষা হলো ম্যান-মেকিং ক্যারেক্টার৷ শিক্ষা মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। কিন্তু এ শিক্ষাক্রমে তা নেই৷ এতে মৌলিক জ্ঞানবিজ্ঞান সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি৷ জ্ঞানবিজ্ঞান ছাড়া একটা স্মার্ট জাতি তৈরির প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এ শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা উপকরণ নিয়ে ব্যবসা বাড়বে, কোচিং-গাইড ব্যবসা শুরু হবে৷ ফলে প্রকৃত শিক্ষার বদলে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ত্বরান্বিত হবে।’