বেতন-ভাতা দাবিতে ইবিতে ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষকদের মানববন্ধন


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:৪৭ পিএম, ২৭শে জানুয়ারী ২০২৪


বেতন-ভাতা দাবিতে ইবিতে ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষকদের মানববন্ধন
ছবি: সংগৃহীত

গত দুই মাস ধরে কোনো রকমের বেতন-ভাতা না পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ফলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে ঘটছে ব্যাঘাত। তাই বেতন ভাতাদির স্থায়ী সমাধান ও ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। 


শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুহ. মুজাম্মিল হক মোল্লাহ-এর নেতৃত্বে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে "আমার সবাই পড়তে চাই আমার শিক্ষকের বেতন চাই", "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ" সহ নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।


এসময় এতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক, মো: গোলাম মামুন, মোহা: গোলাম কিবরিয়া, মো: আব্দুল আলীম, আনজুমান আরা, ফেরদৌসী খাতুন, আফরোজা বেগম, এনায়েতুন পারভীন, মর্জিনা আফরিন, বুলবুল আহমেদ, মশিউর রহমান, মো: জিয়ারুল ইসলাম। এছাড়াও কর্মচারী মো: রফিকুল ইসলাম, মো: সোহরাব হোসেন ও রাবেয়া খাতুনসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।  


এ সময় মানববন্ধনে শিক্ষক আবদুল আলীম তার বক্তব্যে বলেন , গত ডিসেম্বর মাস থেকে আজ জানুয়ারির ২৭ তারিখ কিন্তু এখনও আমরা বেতন পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে আমরা যায়নি। মনে হচ্ছে আমরা ভিক্ষা চাইতে আসছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা যথাসময়ে বেতন পেলে আমরা কেন পাব না? যেসময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ক্লাসরুমে থাকার কথা সেসময়ে মাঠে নামতে হচ্ছে। এটা শিক্ষকদের মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। 


তিনি আরও বলেন, আমরা ২ জন শিক্ষক এ বছর অবসরপ্রাপ্ত হতে যাচ্ছি। অথচ যেখানে বেতন ভাতা নেই সেখানে অবসর ভাতার (পেনশন) প্রশ্নও ওঠে না। বাংলাদেশে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত স্কুল কলেজে ঠিক মতো বেতনভাতা পাচ্ছে কিন্তু আমরা কেন পাচ্ছি না? মঞ্জুরী কমিশন যদি অভিন্ন নীতিমালা গ্রহণ করে থাকে সেটা প্রশাসন বুঝবে আমরা সাধারণ শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হবে কেন?


প্রধান শিক্ষক মুহ. মুজাম্মিল হক মোল্লাহ বলেন, আমরা শিক্ষকরা সিন্ডিকেট থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২৮ বছর হয়েছে, এতদিন পর্যন্ত বেতন বন্ধ ছিলো না। হঠাৎ মঞ্জুরি কমিশনের কথা বলে দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই বেতন পাচ্ছে শুধু আমার বেতন পাচ্ছি না। মন্দিরে কমিশন সারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ কে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে চালিয়ে নিতে বলেছে। অন্যান্য সকল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ তাদের বেতন পেলেও আমরা ডিসেম্বর জানুয়ারিতে এখন পর্যন্ত বেতন পাইনি। আমাদের টোটাল ১২ জন শিক্ষক এবং ৩ জন কর্মচারী রয়েছে। প্রায় চারশতাধিক শিক্ষার্থী আমাদের।


আরও পড়ুন: হল বন্দী জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক


এ নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে গেলে তিনি বলেন, এটা আমার দেখার বিষয় না। আমি কি আপনাদের নিয়োগ দিয়েছি?


এ বিষয়ে আইআইইআর'র পরিচালক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, আমরা বেতন দেয়ার দায়িত্বে নেই আমরা শুধু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে তবুও আমরা আইআইইআর থেকে ধার হিসেবে তাদেরকে এতোদিন বেতন দিয়েছি। তবে আমাদের ইন্সটিটিউটের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য প্রোগ্রামে যে খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছে তাদের বেতন দিতে আমাদের দুই মাস ধরে স্কুলের বেতন বন্ধ রাখতে হয়েছে। নয়তো অন্যান্য প্রোগ্রাম চালাতে ব্যহত হচ্ছিলো। তবে স্কুলের শিক্ষকদের বেতন দেয়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। আমরা ধার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এতোদিন টাকা দিয়েছি।


আরও পড়ুন: জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্চিত ঘোষণা


এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ইউজিসির প্রতিনিধিদের বলেছি বেতন চালু রেখে কোন ব্যত্তয় থাকলে আমাদের জানাতে কিন্তু বেতন বন্ধ করে কিভাবে আমরা এদের চালাবো! আমরা কোথা থেকে দেব! কে আমাকে ৯০ লাখ টাকা লোন দিবে! আমাকে মাত্র ২০ লাখ টাকা দিয়েছে, এতে আমি ২ মাসের বেশি বেতন দিতে পারব না! ইউজিসি বলেছিল এদের চাকরি হবে ইউজিসি কাঠামো অনুযায়ী হবে, কিন্তু বেতন হবে সরকারি শিক্ষকদের কাঠামো অনুযায়ী। এখন তারাই বলছে যে, একজন স্কুলের শিক্ষক কিভাবে ৬০/৭০ হাজার বেতন পায়! আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমিটি করে ২ সপ্তাহ সময় দিয়েছি বিষয়টি সমধান করার।


জেবি/এসবি