উপার্জন না থাকলেও স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য স্বামী: আদালত


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:৩৬ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারী ২০২৪


উপার্জন না থাকলেও স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য স্বামী: আদালত
ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট | ফাইল ছবি

চাকরি বা ব্যবসা থেকে আয় বা উপার্জন থাকুক বা না থাকুক স্ত্রীকে ভরণপোষণের খরচ দিতে বাধ্য স্বামী। প্রয়োজনে পুরুষরা অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজ করেও দিনে ৩০০-৪০০ রুপি আয় করতে পারেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্ত্রীকে ভরণপোষণের মামলায় এমনটাই পর্যবেক্ষণ রেখেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। 


রবিবার (২৮ জানুয়ারি) ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।


আরও পড়ুন: পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববীতে বিয়ের অনুমতি দিল সৌদি


সংবাদমাধ্যম বলছে, এক ব্যক্তির বিবাহ বিচ্ছেদের পর পারিবারিক আদালতের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তিকে তার সাবেক স্ত্রীকে মাসিক ২ হাজার রুপি করে ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই এলাহাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিলেন তিনি।


তবে আদালতের লখনৌ বেঞ্চের পক্ষ থেকে সেই পিটিশন খারিজ করে দেওয়া হয়। বিচারপতি রেণু আগরওয়াল নির্দেশ দেন, ভরণপোষণের বকেয়া অর্থ যাতে ওই ব্যক্তি তার সাবেক স্ত্রীকে মিটিয়ে দেন, তা নিশ্চিত করতে।


জানা গেছে, ২০১৫ সালে ওই ব্যক্তির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য ওই নারীর ওপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। একপর্যায়ে ওই নারী বাধ্য হয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। এরপর ২০১৬ সাল থেকে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকছিলেন।


পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সেই সময় পারিবারিক আদালতের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তিকে তার সাবেক স্ত্রীকে মাসিক ২ হাজার রুপি করে ভরণপোষণ দিতে বলা হয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন ওই ব্যক্তি।


হাইকোর্টে করা আবেদনে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, তার সাবেক স্ত্রী শিক্ষকতা করে মাসে ১০ হাজার রুপি উপার্জন করেন। অন্যদিকে তিনি গুরুতর অসুস্থ, চিকিৎসার খরচ অনেক। তার মা-বাবা ও বোনও তার উপার্জনের ওপরই নির্ভরশীল। রোজগারের জন্য তিনি দিনমজুরের কাজ করছেন। এই পরিস্থিতিতে তার পক্ষে সাবেক স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়া সম্ভব নয়।


তবে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, একজন স্বামীর চাকরি থেকে আয় না থাকলেও তিনি তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। কারণ তিনি একজন অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজ করে দিনে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ রুপি উপার্জন করতে পারেন।


আরও পড়ুন: সৌদিতে এক সপ্তাহে ১৯ হাজারের বেশি অভিবাসী গ্রেফতার


আদালতের নির্দেশে বলা হয়, ওই ব্যক্তির সাবেক স্ত্রী মাসে ১০ হাজার রুপি উপার্জন করেন, এমন কোনও প্রমাণ বা নথি দেখাতে পারেননি। আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই ব্যক্তি শারীরিকভাবে সুস্থ, কায়িক শ্রম করে উপার্জন করতে সক্ষম তিনি।


হাইকোর্টের নির্দেশে আরও বলা হয়, ‘যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয়, ওই ব্যক্তির চাকরি বা গাড়ি ভাড়া দিয়েও কোনও উপার্জন নেই, তাও তিনি স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। কারণ সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে অঞ্জু গর্গের মামলায় বলেছিল- কোনও ব্যক্তি অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজ করলেও, তিনি দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ রুপি উপার্জন করতে পারেন।’


জেবি/এজে