হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারি মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:৩৩ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারী ২০২৪


হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারি মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি
ফাইল ছবি

বহুল আলোচিত দেশের বৃহত্তম হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।


রবিবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত -১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ দিন ধার্য্য করেন।


এদিন আদালতে হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 


 এর আগে, ২০১৬ ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।


২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় তিন হাজার ৬৯৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা দেয়ার শর্তে ১১টি মামলায় জেসমিন ইসলামকে জামিন মঞ্জুর করেন তৎকালীন সিনিয়র বিশেষ জজ জহুরুল হক। ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর একই আদালত ১১টি মামলায় পলাতক ১৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে পত্রিকায় আসামিদের পলাতক দেখিয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।হলমার্ক গ্রুপের ঋণ কেলেংকারির এ ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১টি মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীসহ দুদকের ৬ কর্মকর্তা মামলাগুলো তদন্ত করেন। ১১টি মামলার মধ্যে শিবলী একটি মামলায় ও দুদকের উপ-পরিচালক এম আক্তার হামিদ, সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান, সহকারী পরিচালক মশিউর রহমান, সহকারী পরিচালক নাজমুস সাদাত ও উপ-সহকারী পরিচালক জয়নাল আবেদীন দুটি করে মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।অভিযোগপত্রে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল শাখা থেকে হলমার্ক ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। সাক্ষী করা হয়েছে ৮০ জনকে। রমনা থানার মামলাগুলোর নম্বর ৮ থেকে ১৮।যে দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে :১৭ নম্বর মামলা : হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যার, হলমার্ক ফ্যাশন, ওয়ালমার্ট ফ্যাশন, ববি ফ্যাশন ওয়্যার, পারফেক্ট অ্যামব্রয়ডারি, জিসান নিট কম্পোজিটসহ ৬ প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৫ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল আমদানি করা হয়। কিন্তু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এর মূল্য পরিশোধ না করলেও ব্যাংকের ওই শাখা থেকে মূল্য পরিশোধ করা হয়। হলমার্ক ও ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।১৮ নম্বর মামলা : ভুয়া ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের হিসাবে সুতা রফতানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রফতানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভির ও তার স্ত্রী তুলে নেন।২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় ১১টি মামলা করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।


আরও পড়ুন: জামিন পেলেন ড. ইউনূস


এ মামলায় আসামিরা হলেন হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। 

হলমার্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টাপ্রাইজের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম, স্টার স্পিনিং মিলসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিযা, সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. জিয়াউর রহমান, আনোয়ারা স্পিনিং মিলসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।


এ ছাড়া, সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন বা রূপসী বাংলা শাখার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমান, সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার বর্তমান জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরির নামও রয়েছে।


আরও পড়ুন: আদালতে ড. ইউনূস


প্রধান কার্যালয়ের জিএম অফিসের দুই জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান (দুজনই ওএসডি), প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক ও আতিকুর রহমান (দুজনই ওএসডি), দুই উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) ও মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ (সাময়িক বরখাস্ত), দুই এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান (সাময়িক বরখাস্ত) ও এজাজ আহম্মেদের নামও রয়েছে এতে।


আসামিদের মধ্যে হলমার্কের সাতজন এবং সোনালী ব্যাংকের ২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন।


আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।


জেবি/এসবি